টিকা নিতে এসে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে ভাঙচুরের অভিযোগ

নারায়ণগঞ্জ জেলার মানচিত্র
নারায়ণগঞ্জ জেলার মানচিত্র

করোনার প্রথম ডোজ টিকা নিতে এসে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে। অতিরিক্ত ভিড় ও দেরি হওয়ার কারণে উত্তেজিত লোকজন মিলনায়তনের গ্লাস ও চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করেন।

আজ মঙ্গলবার বিকেলে সদর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ ও স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, অতিরিক্ত ভিড়ের কারণে মিলনায়তনের গ্লাস ভেঙে গেছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ২৬ ফেব্রুয়ারির পর থেকে করোনা টিকার প্রথম ডোজ দেওয়া বন্ধ করে দেওয়া হবে—এমন খবরে টিকা নিতে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে সকাল থেকে কয়েক শ নারী-পুরুষ লাইন ধরেন। দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে টিকা নিতে না পেরে লোকজন একপর্যায়ে হুড়োহুড়ি শুরু করেন। উত্তেজিত লোকজনকে আনসার ও স্বাস্থ্য বিভাগের লোকজন শান্ত করতে ব্যর্থ হন। বেলা তিনটার দিকে উত্তেজিত লোকজন টিকাদানকারী স্বাস্থ্যকর্মীদের ওপর হামলার চেষ্টা চালান। এ সময় হামলার কারণে টিকা প্রদান বন্ধ হয়ে গেলে মিলনায়তনের চেয়ার-টেবিল, দরজা-জানালা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ-র‌্যাব এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রিফাত ফেরদৌস প্রথম আলোকে বলেন, প্রথম ডোজ টিকা প্রদান বন্ধ হয়ে যাবে—এই খবরে অতিরিক্ত লোক টিকা নিতে ভিড় করেন। এ কারণে টিকাদানকারী স্বাস্থ্যকর্মীদের ওপর হামলা করার চেষ্টা হয়েছে।
রিফাত ফেরদৌস বলেন, ২৬ ফেব্রুয়ারির পরও প্রথম ডোজ টিকা দেওয়া যাবে। বুধবার থেকে যাতে এ ধরনের ঘটনা না ঘটে, সে জন্য অতিরিক্ত টিকাদানে ২০ জন স্বাস্থ্যকর্মী দেওয়া হবে।

স্বাস্থ্য বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, সদর উপজেলার ফতুল্লা ইউনিয়নের মোট জনসংখ্যা ২ লাখ ৫৪ হাজার। টিকা দেওয়ার জন্য উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে স্বাস্থ্য সহকারী রয়েছেন ২২ জন। উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে টিকা দেন ৬ জন স্বাস্থ্য সহকারী। একজন স্বাস্থ্য সহকারীর পক্ষে ৩০০ থেকে সর্বোচ্চ ৫০০ জন মানুষকে টিকা দেওয়া সম্ভব। কিন্তু টিকা নিতে হুমড়ি খেয়ে পড়েছেন ১০ হাজার লোক। এই অতিরিক্ত মানুষের মধ্যে কে আগে টিকা নেবেন, সেই প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে যায়।

নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা অনিক বিশ্বাস প্রথম আলোকে বলেন, সকাল থেকে টিকা নিতে শত শত নারী-পুরুষ ভিড় জমান। দুপুরে তাঁরা অধৈর্য হয়ে একসঙ্গে মিলনায়তনের ভেতরে ঢুকে পড়েন এবং টিকার বুথে হামলা চালান।

ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রকিবুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, অতিরিক্ত ভিড়ের কারণে অস্থায়ী টিকাদানকেন্দ্রের উপজেলা পরিষদের হলরুমের গ্লাস ভেঙে গেছে। উত্তেজিত হয়ে কেউ ভাঙচুর করেছে, এমন অভিযোগ কেউ করেনি।