টাঙ্গাইলে সরকারি কর্মকর্তা রেদওয়ানা হত্যার বিচারের দাবি সংস্কৃতিকর্মীদের

রেদওয়ানা ইসলাম হত্যা মামলায় তাঁর স্বামী মিজানুর রহমানের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন সংস্কৃতিকর্মীরা। আজ টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের সামনে
ছবি: প্রথম আলো

টাঙ্গাইল জেলা সংস্কৃতিবিষয়ক কর্মকর্তা খন্দকার রেদওয়ানা ইসলামকে হত্যার ঘটনায় করা মামলার আসামি তাঁর স্বামী মিজানুর রহমানের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন সংস্কৃতিকর্মীরা। আজ সোমবার দুপুরে টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের সামনে ‘সাংস্কৃতিক কর্মী কল্যাণ সংস্থা’র উদ্যোগে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়।

খন্দকার রেদওয়ানুল ইসলাম রংপুর সদর উপজেলার হুনুমানতলা এলাকার মৃত খন্দকার রফিকুল ইসলামের মেয়ে। তাঁর স্বামী মিজানুর রহমান পাবনা সদর উপজেলার হেমায়েতপুর চরভাঙ্গারিয়া গ্রামের এলাহি মোল্লার ছেলে। তিনি সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের ভোলা শহরের মহাজনপট্টি শাখায় কর্মরত ছিলেন।

মামলার সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ২২ মার্চ মির্জাপুর কুমুদিনী হাসপাতালে কন্যাসন্তানের জন্ম দেন খন্দকার রেদওয়ানা ইসলাম। তিনি ওই হাসপাতালের একটি কেবিনে ভর্তি ছিলেন। তাঁর স্বামী মিজানুর রহমান ওই বছরের ২৭ মার্চ রেদওয়ানাকে দেখতে হাসপাতালের কেবিনে যান। তিনি চলে যাওয়ার পর হাসপাতালের কর্মীরা কেবিনটি তালাবদ্ধ পান। পরে ওই কেবিন থেকে রেদওয়ানার লাশ উদ্ধার করা হয়। তাঁকে শ্বাস রোধ করে হত্যার আলামত পায় পুলিশ। ঘটনার পরদিন রেদওয়ানার ভাই খন্দকার আরশাদুল আবিদ বাদী হয়ে মির্জাপুর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলায় মিজানুর রহমানকে আসামি করা হয়।

মানববন্ধনে বক্তব্য দেন জেলা সাংস্কৃতিক কর্মী কল্যাণ সংস্থার সভাপতি জাকির হোসেন, প্রধান পরামর্শক এলেন মল্লিক, কার্যকরী সভাপতি বিপ্লব দত্ত, সংগীতশিল্পী ফিরোজ আহমেদ, সদস্য জহুরুল ইসলাম, মনোয়ারা বেগম, শাহনাজ সিদ্দিকী, ঝান্ডা চাকলাদার, কবি ডলি সিদ্দিকী প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, ঘটনার এক বছর পর আসামি মিজানুর রহমান আত্মসমর্পণের পর কারাগারে আছেন। তাঁকে রিমান্ডে নেওয়ার মাধ্যমে এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে আরও কেউ জড়িত আছেন কি না, তা খুঁজে বের করতে হবে। একই সঙ্গে দ্রুততম সময়ের মধ্যে তদন্ত শেষে এ হত্যায় জড়িত ব্যক্তিদের বিচার করতে হবে।

স্বামী আবারও রিমান্ডে

এদিকে খন্দকার রেদওয়ানা ইসলামকে হত্যা মামলায় তাঁর স্বামী মিজানুর রহমানের দ্বিতীয় দফায় তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

টাঙ্গাইলের আদালত পরিদর্শক তানবীর আহমেদ বলেন, ঘটনার পর থেকে পলাতক ছিলেন মিজানুর রহমান। এরপর গত ১৬ ফেব্রুয়ারি উচ্চ আদালত থেকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন পান। পরে ১৩ মার্চ টাঙ্গাইল চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (মির্জাপুর আমলি) আদালতে আত্মসমর্পণ করেন তিনি। এ সময় আদালতের বিচারক বাদল কুমার চন্দ তাঁর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা টাঙ্গাইল সিআইডির পরিদর্শক বাবর আলী বলেন, মিজানুরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে প্রথমে ২২ মার্চ রিমান্ড চাওয়া হয়। আদালত দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গত বৃহস্পতিবার আদালতে পাঁচ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হলে আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। টাঙ্গাইল কারাগারে থাকা মিজানুরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আনা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।