টাঙ্গাইলের সাবেক পৌর মেয়র সহিদুরের জামিন আবেদন আবার নামঞ্জুর

আওয়ামী লীগ নেতা ফারুক হত্যা মামলার আসামি সহিদুর রহমান খান
ছবি: সংগৃহীত

টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলার আসামি সাবেক পৌর মেয়র সহিদুর রহমান খানের চিকিৎসার জন্য অন্তর্বর্তী জামিন আবেদন আবার নামঞ্জুর করেছেন আদালত। আজ সোমবার আদালত ওই নির্দেশ দেন।

এর আগে গত বৃহস্পতিবারও জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে আদালত সহিদুরকে চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন কারা কর্তৃপক্ষকে। সোমবার ১৩ বারের মতো তাঁর জামিন আবেদন আদালত নামঞ্জুর করলেন।

গত বুধবার সকালে অসুস্থ হওয়ার পর সহিদুর রহমান খানকে জেলা কারাগার থেকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে তাঁকে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। সহিদুর সাবেক সাংসদ আমানুর রহমান খান রানার ভাই ও টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় সাংসদ আতাউর রহমান খানের ছেলে। আট মাস ধরে তিনি কারাগারে।

টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতাল সূত্র জানায়, গত বুধবার বুকে ব্যথা অনুভব করায় সহিদুরকে হাসপাতালে আনা হয়েছিল। তবে পরীক্ষা–নিরীক্ষা করে হৃদ্‌যন্ত্রে কোনো সমস্যা পাওয়া যায়নি। তবে থাইরয়েড ও কিডনিতে কিছু সমস্যা পাওয়া গেছে।
টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি মনিরুল ইসলাম খান জানান, চিকিৎসার জন্য সহিদুরের আইনজীবীরা টাঙ্গাইলের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে অন্তর্বর্তী জামিন আবেদন করেন। তাঁরা সহিদুরের চিকিৎসার জন্য যেকোনো শর্তে জামিন প্রার্থনা করেন। শুনানি শেষে আদালতের বিচারক মাসুদ পারভেজ ওই আবেদন নামঞ্জুর করেন।

টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতাল সূত্র জানায়, সহিদুরকে পরীক্ষা–নিরীক্ষা করার জন্য সাত সদস্যবিশিষ্ট মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। এই বোর্ডের প্রতিবেদন পাওয়ার পর তাঁর চিকিৎসার ব্যাপারে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

ফারুক আহমেদ হত্যা মামলায় অভিযুক্ত হওয়ার পর দীর্ঘ ছয় বছর পলাতক থাকার পর গত ২ ডিসেম্বর সহিদুর রহমান খান টাঙ্গাইলের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। আদালত তাঁর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়ে দেন। তারপর থেকে তিনি টাঙ্গাইল জেলা কারাগারে বন্দী রয়েছেন।
২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ফারুক আহমেদের গুলিবিদ্ধ লাশ তাঁর কলেজপাড়া বাসার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনার তিন দিন পর তাঁর স্ত্রী নাহার আহমেদ বাদী হয়ে টাঙ্গাইল সদর থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে হত্যা মামলা করেন।

ফারুক আহমেদ হত্যা মামলা

আওয়ামী লীগ নেতা ফারুক আহমেদ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ২০১৪ সালের আগস্টে গোয়েন্দা পুলিশ আনিসুল ইসলাম ও মোহাম্মদ আলী নামের দুজনকে গ্রেপ্তার করে। আদালতে এ দুজনের দেওয়া স্বীকারোক্তিতে এই হত্যার সঙ্গে তৎকালীন সাংস আমানুর রহমান খান, তাঁর তিন ভাই টাঙ্গাইল পৌরসভার তৎকালীন মেয়র সহিদুর রহমান খান, ব্যবসায়ী নেতা জাহিদুর রহমান খান ও ছাত্রলীগের তৎকালীন কেন্দ্রীয় সহসভাপতি সানিয়াত খানের জড়িত থাকার বিষয়টি উঠে আসে। এরপর অভিযুক্তরা আত্মগোপনে চলে যান।  আমানুর রহমান খান ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে আত্মসমর্পন করেন। প্রায় তিন বছর হাজতবাসের পর তিনি জামিনে মুক্তি পান। তাঁর অন্য দুই ভাই এখন পলাতক।