ঠাকুরগাঁও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির (পবিস) পীরগঞ্জ আঞ্চলিক কার্যালয়ে ফি এবং জামানতের টাকা জমা দিয়েও মিটার পাচ্ছেন না প্রায় এক হাজার আবেদনকারী। কর্তৃপক্ষ বলছে, মিটারের চাহিদার বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। সরবরাহ পাওয়া গেলেই গ্রাহকদের চাহিদা পূরণ করা হবে।
গ্রাহকেরা বলেন, নতুন বিদ্যুৎ–সংযোগ পাওয়ার আশায় মিটারের জন্য আবেদন করে বাড়িতে ‘ওয়্যারিং (তারকরণ)’ শেষ করেছেন তাঁরা। এরপর মিটারের জন্য কয়েক মাস ধরে পীরগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ কার্যালয়ে ধরনা দিচ্ছেন। কিন্তু কার্যালয় থেকে কোনো সুখবর পাওয়া যাচ্ছে না। এ কারণে বিষণ্ন মনে বাড়ি ফিরছেন তাঁরা।
জানতে চাইলে পবিসের পীরগঞ্জ আঞ্চলিক কার্যালয়ের সহকারী মহাব্যবস্থাপক মো. হাসানুল বান্না বলেন, মে মাসের প্রথম সপ্তাহে ৪০০ মিটার পাওয়া গেছে। এগুলো প্রয়োজনের তুলনায় কম। আরও বেশি বেশি মিটার সরবরাহ পাওয়া দরকার।
পীরগঞ্জ পবিসের আঞ্চলিক কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, মিটারের অভাবে পীরগঞ্জের প্রায় এক হাজার আবাসিক আবেদনকারী বিদ্যুতের নতুন সংযোগ পাচ্ছেন না। এর মধ্যে মিটারের জামানতের টাকা জমা দিয়েছেন ৮০০ জন। মিটারের জন্য আবেদন করে জামানতের টাকা জমা দেওয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন আরও দুই শতাধিক আবেদনকারী। মিটারের জন্য আবেদন করতে ১১৫ টাকা লাগে। আর জামানত হিসেবে জমা দিতে হয় আরও ৪৫০ টাকা।
এই উপজেলার কাচনডুমুরিয়া গ্রামের সাদেকুল ইসলাম বলেন, ‘নতুন সংযোগ পাওয়ার আবেদন করে বিদ্যুতের লোকের পরামর্শে বাড়িতে ওয়্যারিং করেছি। এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে মিটার জামানতের টাকাও জমা দিয়েছি। এরপর সাড়ে তিন মাস ধরে অফিসে ঘুরছি। অফিসের লোক বলছে, মিটার নেই। কবে যে মিটার পাব, তা নিয়ে অনিশ্চয়তায় আছি।’
কালঞ্চা গ্রামের সুখেন্দ্র রায় বলেন, ‘জানুয়ারি মাসে আবেদন করে এবারের এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে মিটারের জামানতের টাকা জমা দিয়েছি। এরপর বাড়িতে ওয়্যারিং করিয়ে আড়াই মাস ধরে বিদ্যুৎ অফিসে ধরনা দিচ্ছি, কিন্তু মিটার পাচ্ছি না।’
একই ধরনের কথা বলেন দানাজপুর গ্রামের ললিত চন্দ্র রায়, ভেলাতৈড় গ্রামের নাজমুল হক, গড়গাঁও গ্রামের মোখলেছুর রহমান, যোগেন্দ্র নাথ রায়সহ ১৫-১৬ জন আবেদনকারী। তাঁরা বলেন, ওয়্যারিং করতে তিন থেকে চার হাজার করে টাকা খরচ হয়েছে তাঁদের।
পীরগঞ্জ পবিসের কার্যালয়ের একজন কর্মকর্তা গত শনিবার নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘সম্প্রতি ৩০০ মিটার পাওয়া গেছে। চলতি বছরের মার্চ মাসে জামানত দেওয়া আবেদনকারীদের সেসব মিটার দেওয়া হবে বলে কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানতে পেরেছি।’
পবিসের পীরগঞ্জ কার্যালয়ের উপমহাব্যবস্থাপক মো. শামীম খান বলেন, পীরগঞ্জ উপজেলা শতভাগ বিদ্যুতায়নের আওতায় আনার কাজ চলছে। এই উপজেলায় আরও ১০ হাজার নতুন সংযোগ দেওয়ার লক্ষ্য আছে। প্রয়োজনীয় মিটার সরবরাহ পাওয়া না গেলে যথাসময়ে সংযোগ দিতে দেরি হতে পারে।