বরিশাল নগরের একটি মাদ্রাসায় অর্থাভাবে এক সপ্তাহ ধরে খাবারসংকট চলছে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, প্রতিষ্ঠানটির অন্তত ৭০ জন শিশুশিক্ষার্থীকে এখন ভাতের বদলে মুড়ি খেয়ে জীবন ধারণ করতে হচ্ছে।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির অবস্থান নগরের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের আমানতগঞ্জ এলাকায়। নাম রহমানিয়া কিরাতুল কুরআন হাফেজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানা।
স্থানীয় লোকজন বলেন, আমানগঞ্জ এলাকার পলাশপুর গুচ্ছগ্রামে ২০১৪ সালে একটি ভাড়া বাড়িতে মাদ্রাসা ও এতিমখানাটি গড়ে তোলা হয়। মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেন মাওলানা নুরুল ইসলাম ফিরোজী নামের এক ব্যক্তি। প্রতিষ্ঠার পর থেকে এলাকার সুবিধাবঞ্চিত শিশুরা সেখানে ভর্তি হতে শুরু করে। স্থানীয় লোকজনের সীমিত অনুদানে পড়াশোনা চালায় তারা। শুরুর সময় প্রতিষ্ঠানটিতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল খুব কম। ধীরে ধীরে সংখ্যা বাড়তে থাকায় সেখানে যেমন স্থান সংকুলান হচ্ছিল না, তেমনি আবাসিক শিশুদের খাবারের ব্যবস্থা করাও দুরূহ হয়ে পড়ে। মাদ্রাসাটির প্রতিষ্ঠাতা ও এলাকার লোকজন বিষয়টি বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাংসদ আবুল হাসানাত আবদুল্লাহকে অবগত করেন। তিনি বছরখানেক আগে জেলা পরিষদের মাধ্যমে এই মাদ্রাসার জন্য ১৫ লাখ টাকা অনুদানের ব্যবস্থা করেন। ওই অর্থ দিয়ে জমি কিনে চারতলা ভিত্তির ওপর একতলা ভবন নির্মাণ করা হয়। যদিও অর্থসংকটে সেই কাজের কিছু অংশ এখনো বাকি রয়েছে।
প্রতিষ্ঠাতা নুরুল ইসলাম ফিরোজী বলেন, বর্তমানে এখানে শতাধিক শিশুশিক্ষার্থী পড়াশোনা করে। এর মধ্যে আবাসিকে আছে ৫০ জন। রয়েছে ২০ জন এতিম শিশু। কিন্তু টাকার অভাবে আবাসিক ও এতিম ছাত্রদের নিয়মিত খাবার সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না। প্রায়ই ছোট ছোট শিশুদের ভাতের বদলে মুড়ি খেতে হচ্ছে। এতগুলো ছোট শিশুর খাবারের সংস্থান করতে না পারায় তিনি হতাশ হয়ে পড়েছেন।
মাদ্রাসাটির দুরবস্থার কথা জানতে পেরেছে বরিশাল জেলা প্রশাসন। গতকাল শনিবার তারা ওই শিশুদের খাবারের জন্য জরুরি ভিত্তিতে দুই মেট্রিক টন চাল এবং ১০ হাজার টাকা অনুদান দিয়েছে।
জেলা প্রশাসক এস এম অজিয়র রহমান বলেন, ‘বিষয়টি জানার পর আমি জরুরি ভিত্তিতে ওই অনুদানের ব্যবস্থা করেছি। এখন মাদ্রাসাটির কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলব। আরও কী ব্যবস্থা নিলে সমস্যার স্থায়ী সমাধান হয়, সে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’