‘আপনারা আমাদের নেতাদের (শামীম ওসমান) সম্পর্কে যা তা বলে যাচ্ছেন। ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে দেবেন না। ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে গেলে আপনাদের জিব ছিঁড়ে শীতলক্ষ্যায় ফেলে দেব। শীতলক্ষ্যার পানিতে তা ভেসে যাবে। নেতার (শামীম ওসমান) বিরুদ্ধে ভবিষ্যতে লাগামহীন কথা বললে ছাড় দেওয়া হবে না।’
রোববার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার হরিহরপাড়া এলাকায় ইউনাইটেড ক্লাব প্রাঙ্গণে সাংসদ শামীম ওসমানের ডাকা দলের কর্মিসভায় মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহা এই হুঁশিয়ারি দেন।
খোকন সাহা আওয়ামী লীগ দলীয় সাংসদ শামীম ওসমানের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে পরিচিত। তিনি এবার নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে দলের মনোনয়ন চেয়ে ব্যর্থ হন।
গত সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সোনারগাঁ থানা যুবলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলামের কাছে মুঠোফোনে ৫ লাখ টাকা চাঁদা চেয়ে রেকর্ডিং ফাঁস হলে বিতর্কিত হন এই নেতা। এ ছাড়া খোকন সাহা নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুন মামলার ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি নূর হোসেনের আইনজীবী ছিলেন।
খোকন সাহা বলেন, ‘রাজাকারের সন্তানেরা এখন রাজনীতিতে সক্রিয়। রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করে পেছন থেকে কলকাঠি নাড়ছেন। নেতা (শামীম ওসমান) তো বিষ খেয়ে বিষ হজম করেন। যেভাবে নেতাকে (শামীম ওসমান) চ্যালেঞ্জ করার চেষ্টা করছেন, নেতা কিন্তু কিছুই বলছেন না। নেতা (শামীম ওসমান) কিন্তু আমাদের থামিয়ে রাখতে পারবেন না। ধৈর্যের বাঁধ কিন্তু ভেঙে গেছে। আমাদের সন্তানেরা বড় হয়ে গেছে, তারা কিন্তু সহ্য করবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘ত্বকী হত্যার বিচার আমরা চাই, বারবার বলেছি। তদন্ত এখনো চলছে। অভিযোগপত্র এখনো দেয় নাই। ওনারা খসড়া অভিযোগপত্রের (চার্জশিট) কথা বলেন। আইনের ভাষায় খসড়া চার্জশিট বলে কোনো কিছু নাই। আমি আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাকে বলব, যারা এই কথা বলছে, তাদের গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নেন। তারা কী করে জানল কে খুন করেছে?’
খোকন সাহা বলেন, ‘ওসমান পরিবারকে খুনি পরিবার বলছেন। আমাদের দলেরও কয়েকজন নেতা-নেত্রীও ওসমান পরিবারকে খুনি বলছেন, যা খুশি তা–ই বলবেন না, শালীনতা নিয়ে কথা বলবেন। আপনারা দলের ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতার বিরুদ্ধে যদি আর কথা বলেন, তাহলে জিব ছিঁড়ে শীতলক্ষ্যা, বুড়িগঙ্গায় ফেলে দেব। ধৈর্যের বাঁধ ভাঙবেন না। বাঁধ ভেঙে গেলে শীতলক্ষ্যা পার হয়ে আপনারা বঙ্গোপসাগরে গিয়ে পড়বেন। আমরা নারায়ণগঞ্জে সব হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই। ভবিষ্যতে লাগামহীন কথা বললে ছাড় দেওয়া হবে না।
কর্মিসভায় উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় সাংসদ শামীম ওসমান, ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাইফুল্লাহ বাদল, সহসভাপতি ওয়ালী মাহমুদ, সাধারণ সম্পাদক শওকত আলী, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মীর সোহেল, সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান নাজিম উদ্দিন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফাতেমা মনির, ফতুল্লা ইউপি চেয়ারম্যান লুৎফর রহমান, এনায়েতনগর ইউপি চেয়ারম্যান মো. আসাদুজ্জামান, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সভাপতি জুয়েল হোসেন, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আজিজুর রহমান, সাবেক সভাপতি সাফায়েত আলম, সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসমাইল প্রমুখ।