জামিনে বেরিয়ে এসে ভুক্তভোগীকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ

শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলায় জমি নিয়ে বিরোধের জেরে ভাতিজাকে হাত-পা বেঁধে বুক পর্যন্ত মাটিতে পুঁতে রেখে নির্যাতনের মামলায় গ্রেপ্তার চাচা ও চাচি জামিন পেয়েছেন। জামিনে বেরিয়ে ভুক্তভোগী ও তাঁর পরিবারকে ‘দেখে নেওয়ার’ হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ সোমবার সকালে ভুক্তভোগীর পরিবার স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সাংবাদিকদের কাছে এমন অভিযোগ করেছে।

পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন বলেন, উপজেলার তন্তর গ্রামে চাচা আলীমদ্দিনের (৫৫) সঙ্গে ভাতিজা নুর ইসলামের (৩৫) দুই একর জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল। এর জেরে গত শনিবার দুপুরে আলীমদ্দিন তাঁর স্ত্রী, ছেলেসহ আরও চার থেকে পাঁচজনকে নিয়ে নুর ইসলামের বাড়ি যান। একপর্যায়ে নুর ইসলামকে একা পেয়ে মারধর করে হাত-পা বেঁধে ফেলেন তাঁরা। এরপর উঠানে মাটি খুঁড়ে তাঁকে বুক পর্যন্ত পুঁতে রাখা হয়। এ সময় আলীমদ্দিনের লোকজন নুরের জমিতে ঘর তোলার কাজ করতে থাকেন। পরে পরিবারের লোকজন পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। তিনজন চৌকিদার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে মাটি খুঁড়ে নুর ইসলামকে উদ্ধার করেন। আলীমদ্দিন, তাঁর স্ত্রী মনিরা বেগম ও ছেলে মোক্তার হোসেনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।

এ ঘটনায় ওই দিন রাত ১১টার দিকে নুর ইসলাম বাদী হয়ে সাতজনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন। পরে আলীমদ্দিন, তাঁর স্ত্রী মনিরা বেগম ও তাঁদের ছেলে মোক্তার হোসেনকে পুলিশ গ্রেপ্তার দেখিয়ে গতকাল রোববার আদালতে পাঠান। অভিযুক্ত ব্যক্তিরা জামিন আবেদন করলে আদালত আলীমদ্দিন ও তাঁর স্ত্রীর জামিন মঞ্জুর করেন। তাঁদের ছেলে মোক্তারের জামিন নামঞ্জুর করে শেরপুর কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

অভিযোগ সম্পর্কে জানতে আলীমদ্দিনের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।
নুর ইসলামের স্ত্রী সেলিনা আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার স্বামী হাসপাতালে ভর্তি। আজ সকালে কিছু বুঝে ওঠার আগেই বাড়ির চারপাশ লোকজন ঘিরে ফেলে।’

নুর ইসলাম আক্ষেপ করে বলেন, ‘মামলা করলাম, কিন্তু এক দিনে জামিনে বের হয়ে গেল। গরিবের লাইগা কি আইনও নাই?’

স্থানীয় ইউপি সদস্য রহিমা বেগম প্রথম আলোকে বলেন, ‘জীবন বাজি রাইখা নুর ইসলামরে পুলিশের সহযোগিতায় উদ্ধার করলাম। নাইলে ওই খানে ওর মৃত্যু অইতো। কিন্তু এক দিন না যাইতেই এরা কেমনে জামিনে মুক্তি পাইলো? বিষয়ডা নিয়া আমরা তো অবাক হইয়া গেলাম।’

এ ব্যাপারে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও নালিতাবাড়ী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আনোয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে ১১৪, ১৩৪, ১৪৩, ৪৪৭, ৩২৩, ৩২৫, ৩২৬ ও ৩০৭ ধারায় মামলা করা হয়েছে। গতকাল আদালত তাঁদের জামিন দিয়েছেন। আজ হুমকি-ধমকির বিষয়টি পুলিশের জানা নেই।

নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বছির আহমেদ বলেন, ‘আসামিপক্ষ জামিন পেয়েছে কি না, তা জানি না। তবে বিষয়টি শুনেছি।’