আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেছেন, জামায়াতের যুদ্ধাপরাধীদের শীর্ষ নেতাদের বিচার করে রায় কার্যকরের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে, বাংলাদেশে যেকোনো অপরাধীর চেয়ে দেশের সংবিধান ও সরকার অনেক বেশি শক্তিশালী। সেই জামায়াত কোথায় গর্তে চলে গেছে, আর হেফাজতে ইসলাম তো নস্যি।
আজ বুধবার বিকেলে যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে প্রেসিডিয়াম সদস্যের পদ পাওয়া কুষ্টিয়া-৪ আসনের সাংসদ সেলিম আলতাফের সংবর্ধনা ও বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙচুরের প্রতিবাদে আয়োজিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মাহবুব উল আলম হানিফ এসব কথা বলেন। কুষ্টিয়ার ইসলামিয়া কলেজ মাঠে জেলা যুবলীগ এই সংবর্ধনা ও প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে।
সভায় হানিফ বলেন, ‘বাংলাদেশকে স্বাধীন করার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ১৪টি বছর পাকিস্তানের কারাগারে থাকতে হয়েছিল। বঙ্গবন্ধু ঘুমন্ত জাতিকে জাগিয়ে তুলেছিলেন, যার কারণে আমরা স্বাধীন রাষ্ট্র পেয়েছি, যার জন্য আমরা সংবিধান পেয়েছি। কুষ্টিয়ায় নির্মাণাধীন সেই বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যেই মৌলবাদীরা রাতের অন্ধকারে কাপুরুষের মতো আঘাত হেনেছে।’
ইসলাম শান্তির ধর্ম উল্লেখ করে হানিফ বলেন, মানুষ হত্যা, গণহত্যা কিংবা নারীদের ওপর পাশবিক নির্যাতন ইসলাম সমর্থন করে না। অথচ ১৯৭১ সালে জামায়াতে ইসলামী রাজাকার বাহিনী তৈরি করে ধর্মের দোহাই দিয়ে খুন ও ধর্ষণ চালায়। বিএনপির সমালোচনা করে হানিফ বলেন, এ দেশে ধর্ম নিয়ে রাজনীতি শুরু করেছিলেন জিয়াউর রহমান।
হানিফ আরও বলেন, হেফাজতসহ অন্য মৌলবাদীরা হুমকি দেয়, তারা আপসের কথা বলে। জামায়াতের কাছে হেফাজত কিছুই না, সেই জামায়াতই গর্তে চলে গেছে, হেফাজত তো নস্যি সমতুল্য। এমন কোনো অপশক্তি নেই শেখ হাসিনার সরকারের পতন ঘটাতে পারে।
বেলা সাড়ে তিনটায় সভা শুরু হয়ে বিকেল পাঁচটায় শেষ হয়। এ সময় ফুল ও ক্রেস্ট দিয়ে সাংসদ সেলিম আলতাফকে সংবর্ধিত করে জেলা যুবলীগ। জেলা যুবলীগের সভাপতি রবিউল ইসলামের সভাপতিত্বে সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন কুষ্টিয়া-১ আসনের সাংসদ আ ক ম সরওয়ার জাহান, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সদর উদ্দিন খান, সাধারণ সম্পাদক আসগর আলী, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আক্তারুজ্জামান মাসুম, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান প্রমুখ।
সংবর্ধিত সেলিম আলতাফ বলেন, বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙার মধ্য দিয়ে মৌলবাদীরা মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। ওষুধ যথা স্থানে যথা সময়ে প্রয়োগ করা হবে। যুবলীগের নেতা-কর্মীরা সজাগ আছে।
এদিকে সেলিম আলতাফের এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠান আয়োজনে নাখোশ হয়েছেন তৃণমূলের কিছু নেতা-কর্মী। সেলিম আলতাফ ছাড়াও যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে জেলার আরও দুই নেতা পদ পেয়েছেন। আজকের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ওই দুই নেতাকে দেখা যায়নি। ব্যানারে তাঁদের নামও ছিল না। নাম প্রকাশ না করার শর্তে যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে স্থান পাওয়া ওই দুই নেতার একজন বলেন, এ ধরনের কাজ করা মানে দলের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করা। তিনজনকেই সংবর্ধনা দিতে পারত।