জামালপুরে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। বন্যাকবলিত এলাকা থেকে ধীরে ধীরে পানি নামছে। বন্যাদুর্গত এলাকার মানুষ দুর্ভোগে আছে। এসব এলাকায় দেখা দিয়েছে খাদ্যের সংকট। আজ বৃহস্পতিবার সকাল আটটার দিকে যমুনা নদীর বাহাদুরাবাদ ঘাট পয়েন্টে ১১ সেন্টিমিটার পানি কমে বিপৎসীমার ৪৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
বন্যাকবলিত কয়েকটি পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত বেশির ভাগ মানুষ হতদরিদ্র। অনেক পরিবার কয়েকবার নদীভাঙনের শিকার হয়েছে। তারা আজ নিঃস্ব। এর মধ্যে প্রতিবছর বন্যার হানা। তাঁরা দিনমজুরি বা কৃষিকাজ করে সংসার চালাত। বন্যার কারণে এক সপ্তাহ ধরে এসব পরিবারের পুরুষ সদস্যরা কর্মহীন। এখন তাঁরা তিন বেলা ঠিকমতো খেতে পারছেন না। অনেকেই গবাদিপশু নিয়ে বিপাকে আছেন। মাঠের জমি পানির নিচে তলিয়ে আছে। এ কারণে গোখাদ্যের সংকট দেখা দিয়েছে। ফলে অনেকে গাছের পাতা ও পাটের পাতা খাওয়াচ্ছে গবাদিপশুকে।
জামালপুরে গত কয়েক দিনে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও ভারী বর্ষণে গত বৃহস্পতিবার থেকে বন্যা দেখা দিয়েছে। প্লাবিত হয়েছে রাস্তাঘাট, হাটবাজার, ফসলি জমি, মৎস্য খামার ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। জেলা প্রশাসনের তথ্যমতে, জেলার ৫টি উপজেলার ৩২টি ইউনিয়নের ১৫৫টি গ্রাম বন্যাকবলিত হয়েছে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১৭ হাজার ৭০১টি পরিবার। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা ৬৯ হাজার ৭৬২। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জরুরি ত্রাণসহায়তা হিসেবে ৪৭০ মেট্রিক টন চাল, নগদ ৭ লাখ টাকা ও ৪ হাজার শুকনা প্যাকেট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) পানি পরিমাপক আবদুল মান্নান আজ বৃহস্পতিবার সকাল আটটার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনার পানি ১১ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ৪৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে পানি কমার ধরন খুব ধীরগতির। বন্যার তেমন একটা উন্নতি না হলেও পানি কমেছে। পানি বাড়ার আশঙ্কা না থাকলেও এলাকা থেকে পানি নামতে দেরি হবে।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আলমগীর হোসাইন জানিয়েছেন, সারা জেলায় ৪৬১টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে। তার মধ্যে ৬টি চালু রয়েছে। ওই সব আশ্রয়কেন্দ্রে ৫ হাজার ১৭৫ জন আশ্রয় নিয়েছে। ওই সব আশ্রয়কেন্দ্রে ১ হাজার ৮২০টি গবাদিপশু আশ্রিত আছে।