সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই আবদুল কাদের মির্জা বলেছেন, ‘আমাদের জাতীয় নেতারা কেন চুপ করে বসে আছেন, আমি জানি না। ওনাদের হস্তক্ষেপে যাঁরা অপরাজনীতি করেন, তাঁদের সঙ্গে আমি রাজনীতি করব না। প্রয়োজনে আওয়ামী লীগে থাকতে না পারলে আমি শিক্ষকদের প্রতিষ্ঠা করা বঙ্গবন্ধু শিক্ষা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানে কাজ করব। আমার আধিপত্য বিস্তারের দরকার নেই। আমার কাছে অস্ত্র নেই। অস্ত্র দিয়ে আমি রাজনীতি করি না।’
আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাট পৌরসভা কার্যালয়সংলগ্ন বটতলায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কাদের মির্জা এসব কথা বলেন। আগের দিন সোমবার রাতে বসুরহাটের বঙ্গবন্ধু চত্বরে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠানস্থল ও বসুরহাট বাজারে মিজানুর রহমান ওরফে বাদলের (উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক) নেতৃত্বে হামলার প্রতিবাদে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন কাদের মির্জা। এ সময় তাঁর সঙ্গে উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এস্কান্দার হায়দার চৌধুরী, সহসম্পাদক মো. ইউনুছসহ তাঁর অনুসারী দলীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে কাদের মির্জা বলেন, ‘দলের বর্তমান সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক দুজন জাসদের লোক। দুজনকে আমি জাসদ থেকে এনেছি। আমি কারও গিবত করতে চাই না। সবাইকে পুনর্বাসন করেছি। খিজির হায়াত জাসদের প্ররোচনায় ঘটনাগুলো ঘটাচ্ছেন। তাদের এই কমিটি আমরা মানি না। আমরা গঠনতান্ত্রিক উপায়ে এখানে কমিটি করছি। সেই কমিটির নেতৃত্বে এখানে (কোম্পানীগঞ্জে) আওয়ামী লীগ চলবে। এটাই হলো শেষ কথা।’ সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত নিয়ে কমিটি করা হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।
কাদের মির্জা বলেন, ‘কেউ আমাকে প্ররোচিত করার ক্ষমতা রাখে? অবশ্যই রাখে। গতকাল রাতেও নেত্রী আমাকে বলেছেন, তুমি চুপ থাকো, আমি দেখছি। আমি এ জন্য কোনো কর্মসূচি দিইনি। সাংবাদিক ভাইদের ডেকেছি, তাঁরা দেখে যাক এখানকার অস্ত্রের মহড়া।’ তিনি আরও বলেন, ‘কী অপরাধ ছিল সাংবাদিক বুরহানের? অত্যন্ত কাছে থেকে তাঁকে হত্যা করা হয়েছে। আজকে কেউ কেউ এটাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার ষড়যন্ত্র করছে। আজকে জজ মিয়াদের আটকানোর ষড়যন্ত্র করছে। এটা আমি মানব না। আমি বলেছি, সাংবাদিক বুরহান হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত করে এর বিচার করতে হবে।’
মিজানুর রহমান ওরফে বাদলের নেতৃত্বে হামলার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে কাদের মির্জা বলেন, ‘আজকে কষ্ট লাগছে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে তারা হামলা করে, এই দুঃসাহস তারা কোথায় পেয়েছে? দাঙ্গা পুলিশ এখানে (পৌরসভায়) দাঁড়ানো, আর বাজারে তারা লুটপাট করছে।’
নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা খিজির হায়াত খানের ওপর বসুরহাট পৌরসভার মেয়রের নেতৃত্বে হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা। আজ বেলা একটার দিকে জেলা শহর মাইজদীর টাউন হল মোড়ে এ কর্মসূচি হয়েছে।
খিজির হায়াত খানের ওপর হামলার প্রতিবাদ আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মুছাপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান কক্ষে এক প্রতিবাদ সভা করেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা। প্রতিবাদ সভায় বীর মুক্তিযোদ্ধারা হামলার ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান এবং এ ঘটনার জন্য দায়ী কাদের মির্জাকে অবিলম্বে খিজির হায়াত খানের কাছে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানান। তাঁরা কাদের মির্জাকে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কারের দাবি জানান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার জহিরুল হায়দার, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হালিম সার্জেন, আবদুল হক, এরফানুল হক কমান্ডার, মফিজল হক, হাবিলদার নুর নবী, মাস্টার আবদুল গোরফান, আবুল বাশার প্রমুখ।