প্রশিক্ষণলব্ধ জ্ঞান, মেধা, দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশ ও জনগণের কল্যাণে সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের জন্য নবীন পুলিশ কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ। আইজিপি বলেন, বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে জনগণের সঙ্গে মানবিক আচরণের মাধ্যমে প্রত্যেক পুলিশ সদস্যকে মানবিক পুলিশে পরিণত হতে হবে। নিজের সর্বোচ্চ সামর্থ্য দিয়ে দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজ করতে হবে।
আইজিপি আজ বৃহস্পতিবার সকালে রাজশাহীর সারদায় বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমিতে প্যারেড গ্রাউন্ডে প্যারেড অব অনার ২০২১–এ অভিবাদন গ্রহণ ও প্যারেড পরিদর্শনকালে এ কথা বলেন।
নবীন পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্দেশে আইজিপি বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ ২০৪১ সালে উন্নত দেশে পরিণত হবে। আপনাদের এমনভাবে উন্নত দেশের পুলিশের নেতৃত্ব দিতে হবে, যাতে চাকরি শেষে একটি উন্নত দেশের আধুনিক পুলিশ সদস্য হিসেবে আত্মতৃপ্তি নিয়ে গর্বের সঙ্গে বাড়ি ফিরে যেতে পারেন।’
আইজিপি আরও বলেন, পুলিশের প্রশিক্ষণ আরও প্রায়োগিক ও যুগোপযোগী করার লক্ষ্যে ‘হোম অব পুলিশ’ খ্যাত বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমিকে ন্যাশনাল পুলিশ একাডেমি হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে এর উন্নয়ন ও আধুনিকায়নে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
প্রশিক্ষণকালে প্রশিক্ষণার্থীদের অবস্থান আরামদায়ক করার জন্য আধুনিক ডরমিটরি নির্মাণ ছাড়াও একাডেমির উন্নয়নে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। পুলিশের আধুনিকায়নের অন্যতম উদ্দেশ্য হচ্ছে দেশ ও জনগণের জন্য অনুপম আদর্শের এক পুলিশ বাহিনী গড়ে তোলা।
বাংলাদেশ পুলিশের গৌরবদীপ্ত ইতিহাস উল্লেখ করে আইজিপি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর কালজয়ী আহ্বানে সাড়া দিয়ে পুলিশ ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তোলে। মুক্তিযুদ্ধে ১৩ হাজার পুলিশ অংশগ্রহণ করেছেন, স্বাধীনতার লাল সূর্য ছিনিয়ে আনতে জীবন উৎসর্গ করেছেন ১ হাজার ২৬২ জন বীর সদস্য।’
করোনাকালে বাংলাদেশ পুলিশের সর্বোচ্চ ত্যাগ ও মানবিক ভূমিকার কথা উল্লেখ করে আইজিপি বলেন, করোনা মোকাবিলায় দেশ ও জনগণের সেবায় পুলিশের ৮৫ জন গর্বিত সদস্য জীবন উৎসর্গ করেছেন, আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় ১৯ হাজার পুলিশ সদস্য। অতীত ও সাম্প্রতিক আত্মত্যাগে বলীয়ান হয়ে পুলিশের প্রত্যেক সদস্যকে দেশ ও জনগণের সেবায় এগিয়ে যেতে হবে।
আইজিপি প্রশিক্ষণ সম্পন্নকারী নবীন পুলিশ কর্মকর্তাদের অভিনন্দন জানান। তিনি দৃষ্টিনন্দন কুচকাওয়াজে অংশগ্রহণকারী প্রত্যেক সদস্যকে ধন্যবাদ দেন। এর আগে আইজিপি অশ্বারোহী দল পরিবেষ্টিত হয়ে প্যারেড গ্রাউন্ডে প্রবেশ করেন। তিনি একটি সুসজ্জিত খোলা জিপে চড়ে প্যারেড পরিদর্শন করেন এবং অভিবাদন গ্রহণ করেন। প্যারেডে ছয়টি কন্টিনজেন্ট অংশগ্রহণ করে।
প্রসঙ্গত, প্রশিক্ষণ সম্পন্নকারী ৩৭তম বিসিএস (পুলিশ) ব্যাচের ৫৬ জন শিক্ষানবিশ সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) প্যারেডে অংশগ্রহণ করেন।