ছোট ভাইকে হত্যা করে লাশ পুঁতে রেখেছিলেন ঘরের মেঝেতে

দুই ভাইয়ের মধ্যে ছোট ভাই কয়েক দিন ধরে নিখোঁজ। বড় ভাইয়ের কাছে স্বজনেরা ও আশপাশের লোকজন জানতে চাইলে বলেন, তাঁকে মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। সেটা কোথায় জানতে চেয়ে তাঁকে চাপ দেওয়া হলে তিনি গা–ঢাকা দেন। এতে সবার সন্দেহ হলে বড় ভাইয়ের স্ত্রীকে চাপ দেওয়া হয়। তিনি জানান, দেবরকে তাঁর স্বামী হত্যা করেছেন। লাশ ঘরের মেঝেতে পুঁতে রাখা হয়েছে।

জমিসংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলার ভিংলাবাড়ি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার আট দিন পর আজ মঙ্গলবার লাশটি উদ্ধার হয়। নিহত ব্যক্তির নাম সোহেল মিয়া (৩০)। এ ঘটনায় বড় ভাই ইব্রাহীম খলিলের স্ত্রী রোজিনা আক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ আটক করেছে।

পুলিশ জানায়, ভিংলাবাড়ি গ্রামের প্রয়াত আবুল কাশেমের দুই ছেলে ইব্রাহীম ও সোহেল। দুই ভাইয়ের মধ্যে বাড়ির জমিজমাসহ নানা বিষয় নিয়ে বিরোধ রয়েছে। গত ৩০ আগস্ট দুপুরে দুই ভাইয়ের মধ্যে মারামারি হয়। এ সময় বড় ভাই ইব্রাহীম খলিল কোদাল দিয়ে সোহেলের মাথায় আঘাত করেন। একপর্যায়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান সোহেল। এরপর ইব্রাহীম ও তাঁর স্ত্রী রোজিনা লাশ বস্তায় ভরে তাঁদের বসতঘরে পুঁতে রাখেন।

এদিকে সোহেল মিয়াকে খুঁজে না পেয়ে তাঁর ভাগনে মাঈনউদ্দিন বড় মামা ইব্রাহীমের কাছে জানতে চান। ইব্রাহীম তাঁর ভাগনে মাঈনউদ্দিনকে জানান, সোহেলকে মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে ভর্তি করানো হয়েছে। এই সময় তাঁদের স্বজনেরা সোহেলের অবস্থান জানার জন্য চাপাচাপি করেন। একপর্যায়ে ইব্রাহীম গা–ঢাকা দেন। এতে সন্দেহ আরও বেড়ে যায়। এরপর এলাকার লোকজন ইব্রাহীমের স্ত্রী রোজিনাকে চাপ দেন। একপর্যায়ে রোজিনা নিজেদের বসতঘরে সোহেলের লাশ পুঁতে রাখার বিষয়টি গ্রামবাসীকে জানান।

খবর পেয়ে দেবীদ্বার থানার পুলিশ আজ ওই বাড়িতে গিয়ে বসতঘরের মাটি খুঁড়ে বস্তাবন্দী গলিত লাশ উদ্ধার করে। এরপর ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। রোজিনাকে আটক করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে ভাগনে মাঈনউদ্দিন মামা হত্যার বিচার চেয়ে বলেন, পারিবারিক বিরোধের জের ধরে ছোট মামাকে হত্যা করা হয়। সোহেল একাধিক বিয়ে করেছেন। তাঁর প্রথম স্ত্রীর সংসারে এক ছেলে ও এক মেয়ে আছে।

দেবীদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জহিরুল আনোয়ার বলেন, পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে। এই ঘটনায় থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

ট্রলি ব্যাগে তরুণীর লাশ
কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলার বড় কাঁচি এলাকায় ট্রলি ব্যাগ থেকে অজ্ঞাতনামা এক তরুণীর (৩০) অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় কুমিল্লা-নোয়াখালী মহাসড়কের পাশের ঝোপ থেকে ওই লাশ উদ্ধার করা হয়। আজ লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

মনোহরগঞ্জ উপজেলার নাথেরপেটুয়া পুলিশ ফাঁড়ির তদন্তকেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) জাফর ইকবাল বলেন, পুলিশ ওই তরুণীর পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।