ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে ৪০০ পরিবারকে বাসগৃহ দেওয়া হলেও ১৯ হাজারের বেশি পরিবার এখনো গৃহহীন। নিজের ঘর হারিয়ে তারা ছাপরাঘর তুলে থাকছে।
এ বছর বর্ষায় পদ্মার ভাঙনে শরীয়তপুরে ৫৫০ পরিবার গৃহহীন হয়েছে। এ নিয়ে গত ৫ বছরে পদ্মার ভাঙনে গৃহহীন হওয়া পরিবারের সংখ্যা অন্তত ২০ হাজার। আশ্রয় না পেয়ে এসব পরিবারের সদস্যরা ফসলি জমি, উঁচু মাঠ ও বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের মাঠে আশ্রয় নিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে ৪০০ পরিবারকে দুর্যোগ–সহনীয় বাসগৃহ দেওয়া হলেও ১৯ হাজারের বেশি পরিবার এখনো গৃহহীন। নিজের ঘর হারিয়ে তারা এখন বিভিন্ন জায়গায় ছাপরাঘর তুলে থাকছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ও জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, পদ্মা ও মেঘনা নদীর তীরে শরীয়তপুর জেলার অবস্থান। জেলার ওপর দিয়ে ৫০ কিলোমিটার পদ্মা নদী আর ২০ কিলোমিটার মেঘনা নদী প্রবাহিত হয়েছে। এ অঞ্চলে দুটি নদীই ভাঙনপ্রবণ। প্রতিবছরই বিভিন্ন সময় ভাঙন থাকে, যা বর্ষা মৌসুমে তীব্র হয়। এ বছর জুন মাসের মাঝামাঝি সময়ে নদীতে পানি ও স্রোত বৃদ্ধি পায়। তখন থেকেই ভাঙন শুরু হয়েছে। জাজিরার পূর্ব নাওডোবা, পালেরচর, বড়কান্দি, বিলাশপুর, কুন্ডেরচর, নড়িয়ার ঘড়িসার, চরআত্রা, ভেদরগঞ্জের উত্তর তারাবনিয়া ইউনিয়নে ভাঙন ছিল। এ ৮টি ইউনিয়নের ৫৫০ পরিবার গৃহহীন হয়ে অসহায়ভাবে জীবন যাপন করছে।
অনেককেই গৃহ নির্মাণে সহায়তা দেওয়া হয়েছে। এখনো যাঁরা ঘর নির্মাণ করতে পারেননি, তাঁদেরও সহায়তার আওতায় আনা হবেকাজী আবু তাহের, জেলা প্রশাসক, শরীয়তপুর
জাজিরার পালেরচর ইউনিয়নের মোল্যাকান্দি গ্রামের বাসিন্দা বাচ্চু মৃধার ২ বিঘা কৃষি জমি এবং ১৩ শতক জমির ওপর বসতঘর ছিল। কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন তিনি। গত ২৩ জুলাই তাঁর কৃষিজমি ও বসতবাড়ি পদ্মার ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে। কোথায় জায়গা না পেয়ে পাইনপারা বিদ্যুৎ প্রকল্পের মাঠে ছাপরাঘর নির্মাণ করে বসবাস শুরু করেছেন। বাচ্চু মৃধা বলেন, ‘পদ্মা আমাগো সব কাইরা পথের ফকির বানাইছে। কেউ আশ্রয় না দেওয়ায় বিদ্যুৎ প্রকল্পর মাঠে ছাপরাঘর বানাইয়া থাকতাছি। কৃষিকাজ কইরা সংসার চালাইতাম, এহন হেই জমি পদ্মায়।’
শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক কাজী আবু তাহের বলেন, অনেককেই গৃহ নির্মাণে সহায়তা দেওয়া হয়েছে। এখনো যাঁরা ঘর নির্মাণ করতে পারেননি, তাঁদেরও সহায়তার আওতায় আনা হবে।