ছাগল নিয়ে সেলফি, চুরির অপবাদে দুই শিক্ষার্থীকে গাছে বেঁধে মারধর

ছাগল চু‌রির অপবা‌দে শিক্ষার্থী‌কে গা‌ছে বেঁধে নির্যাতন করা হ‌চ্ছে। আজ শুক্রবার দিনাজপু‌রের হা‌কিমপুর উপ‌জেলায়
ছ‌বি: সংগৃহীত

দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলায় ছাগল চুরির অপবাদ দিয়ে দুই শিক্ষার্থীকে গাছে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। আজ শুক্রবার সকালে উপজেলার মোল্লাবাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর শুক্রবার সন্ধ্যায় অভিযুক্ত নাজমুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ।

নাজমুল ইসলাম উপজেলার ২ নম্বর বোয়ালদার ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য। তিনি কৃষ্টপুর গ্রামের বাসিন্দা। এ ঘটনায় এক শিক্ষার্থীর বাবা বাদী হয়ে হাকিমপুর থানায় মামলা করেছেন। নির্যাতনের শিকার ওই দুই শিক্ষার্থীর বাড়ি উপজেলার হিলিতে। দুজনেই অষ্টম শ্রেণির ছাত্র।

শিক্ষার্থীরা জানায়, শুক্রবার স্কুল বন্ধ থাকায় মোটরসাইকেল নিয়ে মোল্লাবাজার এলাকায় ঘুরতে যায় তারা। এ সময় রাস্তার পাশে একটি ছাগলের বাচ্চা দেখতে পায়। ছাগলটিকে তারা কোলে নিয়ে মুঠোফোনে সেলফি তুলতে শুরু করে। এ সময় স্থানীয় কয়েক লোক ‘চোর চোর’ বলে তাদের ধাওয়া করে। ভয়ে দ্রুত মোটরসাইকেল নিয়ে চলে আসার সময় স্থানীয় লোকজন তাদের ধরে ইউপি সদস্য নাজমুল ইসলামের কাছে নিয়ে যান। পরে তাদের গাছে বেঁধে ইউপি সদস্যসহ স্থানীয় কিছু মানুষ এলোপাতাড়ি মারধর করেন।

স্থানীয় লোকজন জানান, একপর্যায়ে বোয়ালদার ইউপি চেয়ারম্যান মেফতাহুল জান্নাতকে অবহিত করে শিক্ষার্থীদের পরিবারের কাছে দেওয়া হয়। সামাজিক মর্যাদার কথা ভেবে দুই ছাত্রের পরিবার বিষয়টি চেপে যায়। স্থানীয়ভাবে তাদের চিকিৎসা দেওয়া হয়। কিন্তু দুপুরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে শিক্ষার্থী নির্যাতনের ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ে। বিষয়টি হাকিমপুর থানা-পুলিশের নজরে আসে। এরপর বিকেলে মহিলা ডিগ্রি কলেজ এলাকা থেকে অভিযুক্ত ইউপি সদস্য নাজমুল ইসলামকে আটক করে পুলিশ। সন্ধ্যায় নির্যাতনের শিকার এক শিক্ষার্থীর বাবা বাদী হয়ে হাকিমপুর থানায় একটি মামলা করেন।

শিক্ষার্থী‌কে গা‌ছে বেঁধে নির্যাতনের ঘটনায় আটক ইউপি সদস্য নাজমুল ইসলাম। দিনাজপু‌রের হা‌কিমপুর থানায়

হাকিমপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খায়রুল বাসার শামীম বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নির্যাতনের ভিডিওটি দেখে ইউপি সদস্য নাজমুল ইসলামকে আটক করা হয়েছে। ভিডিও দেখে অন্যদেরও শনাক্ত করে আটকের চেষ্টা চলছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নাজমুল ভুল স্বীকার করেছেন। আগামীকাল শনিবার আদালতের মাধ্যমে তাঁকে জেলহাজতে পাঠানো হবে।

বোয়ালদার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মেফতাহুল জান্নাত বলেন, ‘আমি ঘটনার বিষয়ে জানার পর তাদের বলি ওই দুজনকে পুলিশের হাতে তুলে দিতে। কিন্তু ওরা বিষয়টি মীমাংসা করে পরিবারের কাছে তুলে দেয়। এরপর আমি আর কিছুই জানি না।’