চুয়াডাঙ্গায় পৃথক তিনটি হত্যা মামলার রায়ে সিআইডির এক কনস্টেবলসহ অভিযুক্ত তিন আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সেই সঙ্গে এই আসামিদের একজনকে অস্ত্র মামলায় আরও ১০ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে। জেলা ও দায়রা জজ মোহা. রবিউল ইসলাম আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে জনাকীর্ণ আদালতে পর্যায়ক্রমে এই চার মামলার রায় ঘোষণা করেন।
জেলার আলমডাঙ্গা শহরের মাদ্রাসাপাড়ার শেফালী রাণী অধিকারী হত্যা মামলায় তাঁর মেয়ের স্বামী (জামাতা) খুলনার দৌলতপুর উপজেলার মহেশ্বরপাশার বাসিন্দা চুয়াডাঙ্গায় কর্মরত সিআইডির কনস্টেবল অসীম কুমার ভট্টাচার্য, জীবননগর উপজেলার কন্দর্পপুরের গিয়াস উদ্দিন হত্যা মামলায় তাঁর চাচাতো ভাই আনোয়ার হোসেন এবং জীবননগর উপজেলার রতিরামপুর গ্রামের আবদুর রহিম হত্যা মামলায় দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনা-রামনগরের জিয়াউর রহমানকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া অস্ত্র মামলার পৃথক রায়ে জিয়াউরকে আরও ১০ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত।
জেলা ও দায়রা জজ মোহা. রবিউল ইসলাম আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে জনাকীর্ণ আদালতে পর্যায়ক্রমে এই চার মামলার রায় ঘোষণা করেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালের ৮ জুন রাতে সিআইডির কনস্টেবল অসীম কুমার ভট্টাচার্যের ছুরিকাঘাতে তাঁর শাশুড়ি শেফালী রাণী অধিকারী নিহত হন। ওই ঘটনায় নিহতের স্বামী সদানন্দ অধিকারী বাদী হয়ে আলমডাঙ্গা থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলায় অসীম কুমারকে একমাত্র আসামি করা হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (এসআই) সাইফুল ইসলাম তদন্ত শেষে অসীম কুমারকে অভিযুক্ত করে ২০১৯ সালের ১ আগস্ট আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলায় সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে আদালত অসীম কুমার ভট্টাচার্যকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন।
এদিকে ২০১৮ সালের ৪ জুলাই জীবননগর উপজেলার কন্দর্পপুর গ্রামে বসতভিটার জমি নিয়ে বিরোধে কৃষক গিয়াস উদ্দিন চাচাতো ভাই আনোয়ার হোসেনের রডের আঘাতে গুরুতর জখম হন। ঢাকা মেডিকেল কলেজে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৭ জুলাই মারা যান গিয়াস। ওই ঘটনায় নিহতের ভাই আমিরুল ইসলাম বাদী হয়ে আনোয়ার হোসেনসহ সাতজনকে আসামি করে জীবননগর থানায় হত্যা মামলা করেন। আদালত ওই মামলায় আনোয়ার হোসেনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং বাকি ছয়জনকে বেকসুর খালাস প্রদান করেন।
এ ছাড়া ২০১২ সালের ১০ ডিসেম্বর জীবননগর উপজেলার রতিরামপুরের ব্যবসায়ী আবদুর রহিমকে দুর্বৃত্তরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও বোমা হামলা চালিয়ে হত্যা করে। ঘটনার সময় উপস্থিত লোকজন দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনা-রামনগর গ্রামের জিয়াউর রহমানকে অস্ত্রসহ হাতেনাতে ধরে ফেলেন। ওই ঘটনায় নিহতের স্ত্রী রশিদা খাতুন বাদী হয়ে জিয়াউর রহমানসহ অজ্ঞাতপরিচয় দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। এ ছাড়া পুলিশ বাদী হয়ে অস্ত্র আইনে পৃথক মামলা করে। মামলায় সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে আদালত আবদুর রহিম হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং অস্ত্র মামলায় আরও ১০ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেন।