যশোর সদর উপজেলার ইছালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে হত্যার হুমকি দেওয়ার ঘটনায় যুবলীগের নেতা মাজহারুল ইসলামকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। গতকাল শুক্রবার রাতে যশোর জেলা যুবলীগের সভাপতি মোস্তফা ফরিদ আহমেদ চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম চাকলাদার স্বাক্ষরিত এ নোটিশ দেওয়া হয়। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
নোটিশে বলা হয়েছে, প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে অকথ্য ভাষায় কথা বলার অডিও রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক, স্থানীয় পত্রিকা ও ইলেকট্রনিক গণমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। যুবলীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কোনো নেতা এমন ভাষা ব্যবহার করতে পারেন না। এটি দলীয় শৃঙ্খলা ও গঠনতন্ত্র পরিপন্থী। এতে সংগঠনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে। যুবলীগের কেন্দ্রীয় চেয়ারম্যান ও সাধারণ সম্পাদকের নির্দেশে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেওয়া হলো। জবাব সন্তোষজনক না হলে তাঁর বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
ইছালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কমিটি গঠন করা নিয়ে যশোর সদর উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মাজহারুল ইসলাম প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলামকে হত্যার হুমকি দেন। সেই হুমকির অডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে যুবলীগের নেতা মাজহারুলকে বলতে শোনা যায়, ২৪ ঘণ্টা পর যদি ওই শিক্ষক যশোরে থাকতে পারেন, তাহলে তিনি হাতে চুড়ি পরে ঘুরে বেড়াবেন। এ ঘটনায় গত ৩১ মার্চ ভুক্তভোগী প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে যশোর কোতোয়ালি মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
জিডিতে প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম উল্লেখ করেছেন, যশোর সদর উপজেলার ইছালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর আগের কমিটির অগোচরে যুবলীগ নেতা মাজহার ও তাঁর সহযোগীরা অ্যাডহক কমিটির সভাপতি হিসেবে মনিরুজ্জামানকে নিযুক্ত করেন। এতে ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ও অভিভাবকেরা এই কমিটির বিরুদ্ধে অনাস্থা আনাসহ একজন অভিভাবক হাইকোর্টে মামলা করেন। বর্তমানে মামলাটি চলমান। এরই জেরে ২৪ মার্চ বেলা দুইটার দিকে মাজহার তাঁর ফোন থেকে তাঁকে (প্রধান শিক্ষক) কল করে কমিটি অনুমোদনের জন্য আবেদন করতে বলেন। তাঁকে কমিটির বিষয়ে মামলা চলমান জানালে তিনি গালিগালাজ করেন ও জীবননাশের হুমকি দেন।
ওই শিক্ষককে গালিগালাজ ও হত্যার হুমকি দেওয়ার ঘটনা তদন্তের অনুমতি দিয়েছেন আদালত। গত বুধবার যশোর সদর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মঞ্জুরুল ইসলাম এই অনুমতি দেন। এরপর অভিযোগ তদন্তের জন্য ইছালী পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) মোকাররমকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।