চুয়াডাঙ্গায় ট্রাক মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ

চাঁদা আদায় নিয়ে দুটি সংগঠন মুখোমুখি

চুয়াডাঙ্গায় ট্রাক মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের নামে পণ্যবাহী ট্রাক থেকে চাঁদা উত্তোলনকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। আন্তজেলা ট্রাক ও ট্যাংক লরি শ্রমিক ইউনিয়ন এই চাঁদা আদায়কে অবৈধ উল্লেখ করে তা বন্ধের দাবি জানিয়েছে।
তবে ট্রাক মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, কেন্দ্রীয় পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের তিনটি ফেডারেশনের যৌথ সিদ্ধান্ত মেনে ও অনুমোদন নিয়েই গাড়ির যাত্রা শুরুর সময় সীমিত আকারে অর্থ আদায় করা হচ্ছে। ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকে ট্রাক ও ট্যাংক লরি শ্রমিক ইউনিয়নেরই বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে।

ঐক্য পরিষদের নামে ট্রাক চালানের মাধ্যমে চাঁদা উত্তোলন, বিশৃঙ্খলা ও নৈরাজ্য বন্ধের আহ্বান জানিয়ে আন্তজেলা ট্রাক ও ট্যাংক লরি শ্রমিক ইউনিয়নের পক্ষ থেকে চুয়াডাঙ্গায় ট্রাক মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। আন্তজেলা ট্রাক ও ট্যাংক লরি শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি এমদাদুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক মো. মুনতাজ আলীর গত রোববার স্বাক্ষরিত পত্রটি গতকাল সোমবার দুপুরে মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের কার্যালয়ে পৌঁছায়।

ওই চিঠিতে অভিযোগ করা হয়, গত ৪ জুন পুলিশ সদর দপ্তরে পুলিশ মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় সব প্রকার অবৈধ চাঁদা বন্ধে পরিবহন মালিক-শ্রমিক সংগঠনের নেতারা একমত পোষণ করেন। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রচেষ্টায় সারা দেশের মতো চুয়াডাঙ্গা জেলাতেও পরিবহন সেক্টরে সব প্রকার চাঁদা বন্ধ হয়ে যায়। শৃঙ্খলা আসে পরিবহন সেক্টরে।

পত্রটিতে সুনির্দিষ্ট আকারে অভিযোগ করে বলা হয়, অত্যন্ত দুঃখের বিষয়, চুয়াডাঙ্গা জেলা ট্রাক মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের নামে ট্রাক চালান করে নতুন কৌশলে জেলায় আবারও চাঁদাবাজির কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। ট্রাক বন্দোবস্তকারী বা দালাল অফিসে ৫০ পাতার একটি চাঁদার রসিদ বই ৫ হাজার টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। আর বন্দোবস্তকারী অফিসগুলো ট্রাক থেকে ১০০ থেকে ২০০ টাকা হারে আদায় করছে। সেই সঙ্গে আন্তজেলা ট্রাক ও ট্যাংক লরি শ্রমিক ইউনিয়নের নামে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হাসান জোয়ার্দ্দার তা অস্বীকার করেন। তিনি জানান, মসিউর রহমান ও খোন্দকার এনায়েত উল্যাহর নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি, সাবেক মন্ত্রী শাজাহান খান ও ওসমান আলীর নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন এবং রমেশ চন্দ্র ঘোষ ও আবু রায়হানের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন সারা দেশের পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের নেতৃত্বদানকারী প্রধান সংগঠন। ওই তিন সংগঠনের নেতারা যৌথ সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সড়ক-মহাসড়ক ও বাস-ট্রাক টার্মিনাল থেকে কোনো চাঁদা আদায় করা যাবে না। তবে মালিক ও শ্রমিক সদস্যদের কাছ থেকে সদস্য চাঁদা নিজ নিজ অফিস থেকে সংগ্রহ করা যাবে। আর পরিবহন চলাচলের ক্ষেত্রে গাড়ির যাত্রা শুরু ও শেষ প্রান্তে খরচ নির্বাহের জন্য ন্যূনতম অর্থ তিন সংগঠনের অনুমোদন সাপেক্ষে আদায় করা যাবে। সাইফুল হাসানের দাবি, অভিযোগকারী সংগঠনের নামে আদালতে মামলা চলায় বর্তমানে তাদের কোনো বৈধতা নেই। অনুমোদন সাপেক্ষে ঐক্য পরিষদ চুয়াডাঙ্গাতে অর্থ আদায় করছে।