কুমিল্লায় সিএনজিচালিত অটোরিকশা থেকে চাঁদাবাজি বন্ধের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন কয়েক শ চালক। আজ বুধবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত কুমিল্লা-নোয়াখালী মহাসড়কের কচুয়া চৌমুহনী এলাকার সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করা হয়। তাঁরা অবিলম্বে চাঁদাবাজি বন্ধের দাবি জানান।
চালকদের অভিযোগ, কুমিল্লা নগরের বিভিন্ন সড়কে প্রতিদিন হাজারের বেশি সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলাচল করে। কারণ ছাড়াই এসব অটোরিকশার চালকদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করছে রাজনৈতিক নেতাদের অনুসারী ও ট্রাফিক পুলিশ। নগরের কান্দিরপাড়, টমছমব্রিজ, জাঙ্গালিয়া বাসটার্মিনাল ও পদুয়ার বাজার বিশ্বরোড এলাকা থেকে ওই টাকা তোলা হয়। এতে চালকেরা হিমশিম খাচ্ছেন।
অটোরিকশাচালকেরা বলছেন, ট্রাফিক পুলিশের দেওয়া টোকেন ছাড়া কোনো অটোরিকশা নগরীতে চলাচল করতে পারে না। নগরের সড়কগুলোতে চলাচল করতে প্রত্যেক চালককে মাসে ১ হাজার ২০০ টাকা চাঁদা দিতে হয়। চাঁদা না পেলে ট্রাফিক পুলিশ অটোরিকশা ধরে মামলা দিয়ে পুলিশ লাইনসে রেখে দেয়। এ সমস্যা সমাধানে তাঁরা আজ সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন।
চালক আবদুল আউয়াল বলেন, ‘এটা মগের মুল্লুক নাকি! কান্দিরপাড়, টমছমব্রিজ, বিশ্বরোডে চাঁদা নেওয়া হয়। লালমাই বাজারে চাঁদা নেওয়া হয়। কোন যুক্তিতে চাঁদা নেওয়া হচ্ছে? মালিকের গাড়িভাড়া, চাঁদার টাকা দেওয়ার পর হাতে কোনো টাকা থাকে না। প্রতিদিন সেভাবে যাত্রীও পাই না।’
চাঁদাবাজির অভিযোগ অস্বীকার করে ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক এমদাদুল হক বলেন, ‘জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে, নগরের যানজট নিরসনে কান্দিরপাড়ের অটোরিকশাস্ট্যান্ডটি বন্ধ করতে হবে। কমিটির সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এ জন্য চালকেরা আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলছেন।’ তা ছাড়া মাসিক টাকা আদায়ের বিষয়টি সত্য নয় বলে জানান তিনি।
অবরোধের খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে হয়রানি বন্ধের আশ্বাস দিলে চালকেরা দুপুরের পর অবরোধ তুলে নেন। এতে সড়কে প্রায় তিন ঘণ্টা যানচলাচল বন্ধ ছিল। এ সময় সড়কের দুই পাশে ব্যাপক যানজট দেখা দেয়।
কুমিল্লা সদর দক্ষিণের ইউএনও শুভাশিস ঘোষ প্রথম আলোকে বলেন, ‘অটোরিকশাচালকদের আশ্বস্ত করেছি। বৈধ কাগজপত্র থাকার পর যদি ট্রাফিক পুলিশ হয়রানি করে, তাহলে পুলিশ সুপারকে জানাতে বলেছি। পরে তাঁরা অবরোধ তুলে নেন।’
জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভাপতি ও কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, চাঁদা আদায়ের কোনো সুযোগ নেই। প্রশাসন অভিযোগ পেলে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।