চাঁদপুরে বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে ঈদের পর ব্যবস্থা: নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান

চাঁদপুর জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে জেলা নদী রক্ষা কমিশনের বিশেষ সভায় বক্তব্য দেন জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান মন্জুর আহমেদ চৌধুরী
ছবি: প্রথম আলো

চাঁদপুরে মেঘনা নদী থেকে যাঁরা অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের সঙ্গে জড়িত, তাঁদের বিরুদ্ধে ঈদের পর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান মঞ্জুর আহমেদ চৌধুরী। তিনি বলেছেন, বছরের পর বছর যাঁরা অবৈধভাবে বালু তুলেছেন, তার একটা হিসাব তৈরি করা হচ্ছে। এ বিষয়ে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।

চাঁদপুর জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে জেলা নদী রক্ষা কমিশনের বিশেষ সভায় এসব কথা বলেন কমিশনের চেয়ারম্যান।

চাঁদপুর জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশের সভাপতিত্বে সভায় সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার ৭২ কর্মকর্তা অংশ নেন। বক্তব্য দেন জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনার মো. আখতারুজ্জামান, খ ম কবিরুল ইসলাম, বিল্লাল হোসেন খান, চাঁদপুরের পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদ, নৌ পুলিশ সুপার মো.কামরুজ্জামান প্রমুখ।

নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, চাঁদপুরে অবৈধভাবে বালু তোলা হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে চাঁদপুরের প্রশাসন সাহসিকতার সঙ্গে কাজ করলেও এখানকার টিভি সাংবাদিকসহ অনেক সংবাদকর্মীর কোনো ভূমিকা লক্ষ করা যাচ্ছে না। বিষয়টি নিয়ে তিনি ঢাকায় কথা বলবেন বলে জানান। বালুসন্ত্রাসীদের উদ্দেশে মঞ্জুর আহমেদ বলেন, চাঁদপুরের মেঘনা নদীতে যাঁরা অবৈধভাবে ড্রেজার দিয়ে বালু তুলে বিক্রি করছেন, ঈদের পরে তাঁদের কাশিমপুর বা কেরানীগঞ্জ কারাগারে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে। তাঁদের সঙ্গে অর্থনৈতিকভাবে জড়িত ব্যক্তিদেরও দুদকের মাধ্যমে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সম্প্রতি দেখা যায়, চাঁদপুরে পদ্মা ও মেঘনার ডুবোচর থেকে ড্রেজার দিয়ে প্রভাবশালীরা অবৈধভাবে দেদার বালু তুলছেন। এর পেছনে সরকারের একজন মন্ত্রীর ইন্ধনও পাওয়া গেছে। অপরিকল্পিতভাবে বালু তোলায় চাঁদপুরের জীববৈচিত্র্য মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এভাবে বালু তোলা অব্যাহত থাকলে ভবিষ্যতে চাঁদপুর শহরও ভয়াবহ হুমকির মুখে পড়বে বলে জানিয়েছেন বিআইডব্লিউটিএ ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা।

সভা শেষে চাঁদপুরের সাংবাদিকদের সঙ্গে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে মিলিত হন কমিশনের চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, ‘আপনারা ভয় পাবেন না। আমরা নদী রক্ষা কমিশন আপনাদের পাশে আছি। প্রশাসনও আপনাদের পাশে থাকবে। অবৈধভাবে বালু তোলার বিরুদ্ধে আপনারা লেখেন, আমাদের জানান। এতে নদী রক্ষার পাশাপাশি নদীর সম্পদ, জাতীয় মাছ ইলিশসহ অন্যান্য মাছও রক্ষা পাবে। এ জন্য সরকারি সব বিভাগকে এসব সম্পদ রক্ষায় একযোগে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছি। বছরের পর বছর যাঁরা অবৈধভাবে বালু তুলেছেন, তার একটা হিসাব তৈরি করা হচ্ছে। সেই বালুর টাকা আমরা আদায় করে ছাড়ব। তাঁদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থাও নেওয়া হবে। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।’

এর আগে দুপুরে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের সদস্যরা চাঁদপুরের পদ্মা–মেঘনায় বালু তোলা হচ্ছে কি না, তা দেখতে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের নিয়ে নদীতে অভিযান চালান।