চলনবিলে নৌকার মাঝিকে হত্যার ঘটনায় আসামির স্বীকারোক্তি

সিংড়ার নৌকার মাঝি আরজু মিয়াকে হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার বাইজিদ বোস্তামী (১৮)। আজ সোমবার দুপুরে নাটোর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনে
ছবি: প্রথম আলো

নাটোরের চলনবিলে নৌকার মাঝি আরজু মিয়াকে হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার এক আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। আজ সোমবার বিকেলে নাটোরের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে বাইজিদ বোস্তামী (১৮) বলেছেন, লাথি মারার প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য তাঁরা তিন বন্ধু মিলে পরিকল্পিতভাবে আরজু মিয়াকে হত্যা করেন।

এর আগে আজ দুপুরে নাটোরের পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা এ ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা দিয়ে নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন।

সিংড়া উপজেলার চামারী ইউনিয়নের আনন্দনগর গ্রামের আরজু মিয়া (৩৫) গত বৃহস্পতিবার চলনবিলে যাত্রী পারাপারের সময় নিখোঁজ হন। শনিবার সকালে গুরুদাসপুর উপজেলার বিলসা এলাকা থেকে ভাসমান অবস্থায় তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। তাঁর মাথার পেছনে কাটা জখম থাকায় ঘটনাটি হত্যাকাণ্ড বলে পুলিশ ধারণা করে। এ ব্যাপারে গুরুদাসপুর থানায় ওই দিন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়।

গুরুদাসপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মনোয়ার হোসেন জানান, মুঠোফোনে প্রযুক্তি ব্যবহার করে গতকাল রোববার পুলিশ গুরুদাসপুর উপজেলার বিলহরিবাড়ি গ্রামের নাসির বোস্তামীর ছেলে বাইজিদ বোস্তামীকে আটক করে। পরবর্তী সময়ে তিনি পুলিশ ও জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে হত্যাকাণ্ডের বিস্তারিত বর্ণনা দেন।

বাইজিদের ভাষ্য অনুযায়ী, আরজুর বাড়ির পাশের এক মেয়ের সঙ্গে বাইজিদের এক বন্ধুর প্রেমের সম্পর্ক ছিল। প্রায় সাত মাস আগে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে গেলে আরজু মাঝি তাঁকে বকাঝকা করেন ও লাথি মারেন। এর প্রতিশোধ নিতে তাঁরা তিন বন্ধু আরজুকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। সেই অনুযায়ী গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তিনজন মিলে আরজুর নৌকা ভাড়া করে বিলের মাঝে নিরিবিলি একটি স্থানে যান। সেখানে কৌশলে আরজু মিয়ার হাত–পা বেঁধে ফেলেন। এ সময় চিৎকার করলে তাঁরা আরজুর মাথার পেছনে চায়নিজ কুড়াল দিয়ে আঘাত করেন। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে নৌকা থেকে পানিতে ফেলে দেন তাঁরা। এতে পানিতে ডুবে তাঁর মৃত্যু হয়। পরে তাঁরা ওই নৌকায় করে হরদোমা এলাকায় নেমে যান।

সহকারী পুলিশ সুপার জামিল আকতার বলেন, অপমানের প্রতিশোধ নিতেই নিষ্ঠুরভাবে আরজুকে কোপানোর পর পানিতে ফেলে দিয়ে হত্যা করা হয়। এর সঙ্গে জড়িত অপর দুই আসামিকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে তাঁদের পরিচয় প্রকাশ করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে শিগগির তাঁদের গ্রেপ্তার করা হবে।