করোনার সংক্রমণের কারণে দেড় মাসের বেশি সময় বন্ধ থাকার পর পুনরায় যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। চট্টগ্রাম থেকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের গন্তব্যের উদ্দেশে আজ সোমবার সকাল থেকে ট্রেন ছেড়ে যেতে শুরু করে। তবে ট্রেন চলাচল শুরুর প্রথম দিন যাত্রীসংখ্যা একেবারেই কম।
করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে চলমান বিধিনিষেধ আরও এক সপ্তাহ বাড়িয়েছে সরকার। তবে এখন থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে আন্তজেলাসহ সব ধরনের গণপরিবহন আসনসংখ্যার অর্ধেক যাত্রী নিয়ে চলাচল করতে পারবে। অর্থাৎ দূরপাল্লার বাস, ট্রেন ও লঞ্চ চলবে। গতকাল রোববার এ বিষয়ে আদেশ জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের আদেশের পর রেলওয়ে সীমিত আকারে ট্রেন চালুর সিদ্ধান্ত নেয়। আজ ২৮ জোড়া আন্তনগর, ৯ জোড়া মেইল ও কমিউটার ট্রেন চলাচল শুরু হওয়ার কথা। তবে অর্ধেক আসন ফাঁকা রেখে টিকিট বিক্রি করা হবে। কাউন্টারে কোনো টিকিট বিক্রি হবে না। টিকিট অনলাইন ও মোবাইল অ্যাপে কাটতে হবে। যাত্রীসহ সবাইকে বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক পরতে হবে।
আজ সকাল ৭টা থেকে ১০টা পর্যন্ত চট্টগ্রাম স্টেশন থেকে তিনটি ট্রেন ছেড়ে যায়।
ময়মনসিংহের উদ্দেশে সকাল ৭টা ২০ মিনিটে ছেড়ে যাওয়া বিজয় ট্রেনে যাত্রী ছিলেন মাত্র ৭২ জন। মোট আসনের অর্ধেক যাত্রী পরিবহনের নিয়মে এই ট্রেনে আসন ৩৩১টি।
সকাল ৭টা ৪০ মিনিটের চাঁদপুরগামী সাগরিকা ট্রেনের টিকিট বিক্রি হয় ১০৭টি। এই ট্রেনে অর্ধেক আসনের হিসাবে আসন ২২০টি।
এ ছাড়া সকাল ১০টায় ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায় কর্ণফুলী। এই ট্রেনেও যাত্রী ছিল কম।
অন্তত তিন কারণে ট্রেনে যাত্রী কম হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রাম রেলস্টেশন মাস্টার রতন কুমার চৌধুরী। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, আজ ট্রেন চলাচলের প্রথম দিন। আর ট্রেন চলাচলের ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল গতকাল রোববার বিকেলে। এই দুটি কারণে মানুষ হয়তো ট্রেন চলাচল শুরুর বিষয়ে পুরোপুরি অবগত নয়। তা ছাড়া কাউন্টারে কোনো টিকিট বিক্রির সুযোগ নেই। সব টিকিট বিক্রি হচ্ছে অনলাইনে। কিন্তু সবাই তো অনলাইনে টিকিট কিনতে জানে না বা বিষয়টি বোঝে না। এ জন্য হয়তো প্রথম দিন যাত্রীর সংখ্যা কম।
রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা স্নেহাশীষ দাশগুপ্ত প্রথম আলোকে বলেন, স্বাভাবিক সময়ে চট্টগ্রাম স্টেশন থেকে ৯ জোড়া ট্রেন চলাচল করে। এখনো সেভাবে চলবে। তবে অর্ধেক যাত্রী নিয়ে ট্রেন। সব ট্রেন ঠিক সময়ে স্টেশন ছেড়ে যাচ্ছে বলে জানান তিনি।
দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ নিয়ন্ত্রণে সরকার এ বছর প্রথমে ৫ এপ্রিল থেকে সাত দিনের জন্য গণপরিবহন চলাচলসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ জারি করেছিল। পরে তা আরও দুই দিন বাড়ানো হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় ১৪ থেকে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত আরও কঠোর বিধিনিষেধ দিয়ে ‘সর্বাত্মক লকডাউন’ শুরু হয়। পরে তা আরও চার দফা বাড়িয়ে ২৩ মে পর্যন্ত করা হয়। এবার এই বিধিনিষেধ আরেক দফা বাড়িয়ে ৩০ মে পর্যন্ত করা হলো। যদিও এখন দেশে নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে করোনা রোগী শনাক্তের হার আবার বাড়ছে। আট দিন ধরে রোগী শনাক্তের হারে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা যাচ্ছে।