কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলায় একটি বাসে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের হাঁসেরদিঘি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এতে বাসের চার যাত্রী গুলিবিদ্ধ ও মারধরে আহত হয়েছেন ছয়জন। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বাসটির চালক, তাঁর সহকারী ও বাসের সুপারভাইজারকে আটক করেছে পুলিশ।
বাসটির যাত্রী ও পরিবহনশ্রমিকেরা জানিয়েছেন, রাত দেড়টায় চট্টগ্রামের সিনেমা প্যালেস এলাকা থেকে টেকনাফগামী সৌদিয়া পরিবহনের একটি বাস ৩৩ জন যাত্রী নিয়ে ছেড়ে আসে। কর্ণফুলী নতুন ব্রিজ এলাকা থেকে বাসে আরও সাতজন ওঠেন। তাঁরা সবাই লুঙ্গি পরা ছিলেন এবং তাঁদের তিনটি ব্যাগ ছিল। বাসটি চকরিয়ার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের হাঁসেরদিঘি এলাকায় পৌঁছালে ওই সাতজনের একজন অস্ত্রের মুখে চালককে জিম্মি করে গাড়ির নিয়ন্ত্রণ নেন এবং গাড়িটি তিনি চালাতে থাকেন। অন্যরা বন্দুক, চাপাতি ও ছুরি নিয়ে যাত্রীদের ভয়ভীতি দেখিয়ে লুট করতে থাকেন। এ সময় বাসের যাত্রীদের মারধরও করে ডাকাত দল। কয়েক যাত্রী প্রতিবাদ করলে তাঁদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন তাঁরা। এ সময় চার যাত্রী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। ডাকাতি শেষে হাঁসেরদিঘি থেকে অন্তত ১২-১৫ কিলোমিটার দূরে খুটাখালীর নতুন অফিস নামের এলাকার কাছে বাস থেকে নেমে যান ডাকাতেরা। পরে চালক গাড়ি চালিয়ে রামুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসা দেওয়া হয়। এর মধ্যে গুলিবিদ্ধ চারজনকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহত অন্য ছয়জনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
চকরিয়া থানা-পুলিশ জানায়, রামু থানা-পুলিশের বার্তা পেয়ে বাসটি জব্দ করা হয়। বাসের চালক, তাঁর সহকারী ও সুপারভাইজারকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
বাসটির এক যাত্রীর নাম বিল্লাল হোসেন। তাঁর বাড়ি চট্টগ্রাম শহরের আন্দরকিল্লা এলাকায়। তিনিসহ ছয় বন্ধু মিলে সেন্ট মার্টিন যাওয়ার জন্য সৌদিয়া পরিবহনের বাসটিতে ওঠেন। বিল্লাল হোসেন বলেন, ডাকাতেরা যাত্রীদের মারধর করেছেন। বাধা দেওয়ায় চারজনকে গুলি করেছেন। সব নারীর স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে গেছেন। তাঁরা সবাই লুঙ্গি পরা ছিলেন।
এ ব্যাপারে চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাকের মোহাম্মদ যুবায়ের বলেন, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনজনকে আটক করা হয়েছে। ডাকাতির ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। ডাকাতদের ধরতে পুলিশ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালাচ্ছে।