চকরিয়ায় তিন সংবাদকর্মীর ওপর হামলা

কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারা ইউনিয়নের সাফারি পার্ক গেট এলাকায় আজ রোববার বেলা আড়াইটার দিকে তিন সংবাদকর্মীর ওপর হামলা চালানো হয়েছে। এ সময় দুই সংবাদকর্মীর মুঠোফোন-মানিব্যাগ ও মোটরসাইকেলের চাবি ছিনিয়ে নেওয়া হয়। আহত সংবাদকর্মীদের উদ্ধার করে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।

আহত সাংবাদিকেরা হলেন যুগান্তরের চকরিয়া প্রতিনিধি মনসুর মহসিন, আমার সংবাদের চকরিয়া প্রতিনিধি মোহাম্মদ উল্লাহ ও স্থানীয় দৈনিক আজকের দেশবিদেশ পত্রিকার প্রতিনিধি মোস্তফা কামাল।

চকরিয়ায় কর্মরত সাংবাদিকেরা বলেন, কিছুদিন ধরে ডুলাহাজারা ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক হাসানুল ইসলাম ওরফে আদরের বিরুদ্ধে পাহাড় কাটাসহ বিভিন্ন অপরাধের বিষয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হচ্ছে। যুগান্তরে ‘অল্প দিনে যেভাবে অর্ধশত কোটি টাকার মালিক যুবলীগ নেতা’, ‘যুবলীগ নেতার নেতৃত্বে পাহাড় কেটে মাটি বিক্রি’  এবং আমার সংবাদে ‘বনভূমির পাহাড় কেটে মাটি বিক্রি’ শিরোনামে এক সপ্তাহ আগে কয়েকটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। এতে ক্ষিপ্ত হন যুবলীগের নেতা হাসানুল ইসলাম। সংবাদকর্মীদের দেখে নেওয়ার হুমকি দেন তিনি। এসব ঘটনায় হাসানুলের বিরুদ্ধে চকরিয়ার তিন সংবাদকর্মী বাদী হয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরিও (জিডি) করেছিলেন। সর্বশেষ আজ সকালে কক্সবাজারের পরিবেশ অধিদপ্তরের লোকজন ডুলাহাজারার পাহাড় কাটার বিভিন্ন স্থান সরেজমিনে পরিদর্শন করেন। এ সময় স্থানীয় সংবাদকর্মী হিসেবে পরিবেশ অধিদপ্তরের লোকজনের সঙ্গে হামলার শিকার তিন সংবাদকর্মীও ছিলেন।

চকরিয়া প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মিজবাউল হক বলেন, ‘পরিবেশ অধিদপ্তরের লোকজন চলে যাওয়ার পর সংবাদকর্মীরা চকরিয়া পৌর শহরে ফেরার পথে ডুলাহাজারা সাফারি পার্ক গেট এলাকায় হামলার শিকার হন। যুবলীগের নেতা হাসানুল ইসলামের প্রত্যক্ষ ইন্ধনে তাঁর বড় ভাইয়ের নেতৃত্বে এ হামলা হয়েছে। আমরা প্রেসক্লাব কর্তৃপক্ষ এ হামলার ঘটনার সঙ্গে জড়িত সব দুষ্কৃতকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছি।’

আহত সংবাদকর্মী মোস্তফা কামাল বলেন, ‘যুবলীগের নেতা হাসানুলের বড় ভাই হাবিবুল ইসলামের নেতৃত্বে ডুলাহাজারা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আনাসসহ ১৪-১৫ জন দুর্বৃত্ত প্রকাশ্যে আমাদের ওপর হামলা করেছেন। এ সময় তাঁরা মহসিন ও মোহাম্মদ উল্লাহর মুঠোফোন-মানিব্যাগ ও মোটরসাইকেলের চাবি ছিনিয়ে নেন। পরে পুলিশ গিয়ে উদ্ধার করে আমাদের হাসপাতালে নিয়ে যায়।’

অভিযোগের বিষয়ে হাসানুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি কয়েক দিন ধরে ঢাকায় অবস্থান করছি। আমার ভাইয়ের নেতৃত্বে হামলার ঘটনা মিথ্যা। ছাত্রলীগের কর্মী সাকিবের সঙ্গে কথা–কাটাকাটি, পরবর্তী সময়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। সেটাকে টেনে লম্বা করে আমার ভাইয়ের ওপর দোষ চাপানো হচ্ছে।’

চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোহাম্মদুল হক বলেন, সংবাদকর্মী মনসুর মহসিন ও মোহাম্মদ উল্লাহকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। মোস্তফা কামালকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাকের মুহাম্মদ যুবায়ের বলেন, সংবাদকর্মীদের ওপর হামলা দুর্ভাগ্যজনক। হামলায় জড়িত ব্যক্তিদের ধরতে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।