বাংলাদেশে ৯৫ দশমিক ৮ শতাংশ শিশু ঘরে–বাইরে, স্কুলে ও কাজের ক্ষেত্রে নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। এ শিশুদের মধ্যে ৯৬ দশমিক ২ শতাংশ মেয়ে ও ৯৫ দশমিক ৪ শতাংশ ছেলে। আর মেয়েশিশুরা ঘরেই বেশি যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছে।
বাংলাদেশে শিশু নির্যাতনবিষয়ক এক জরিপে এসব তথ্য উঠে এসেছে। আজ সোমবার দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবে জরিপের ফলাফল তুলে ধরা হয়। মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের আর্থিক সহায়তায় ইনটিগ্রেটেড কমিউনিটি অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডেভেলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভ ইন বাংলাদেশ (আইএনসিআইডিআইএন বাংলাদেশ) নামের একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান দেশব্যাপী জরিপটি পরিচালনা করে।
জরিপের ফলাফল তুলে ধরেন মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের প্রকল্প সমন্বয়কারী রাফেজা শাহীন। জরিপে গ্রাম পর্যায়ের ১ হাজার ৯৪০ ও শহর পর্যায়ের ৩ হাজার ১৩৪ জন শিশুর সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে। সাক্ষাৎকার নেওয়া মোট ৫ হাজার ৭৪ জন শিশুর মধ্যে ২ হাজার ৫৩৭ জন ছেলে ও ২ হাজার ৫৩৭ জন মেয়ে।
জরিপের ফলাফলে উঠে আসে, শারীরিকভাবে ঘরে ৮৬ দশমিক ৯ শতাংশ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ৮২ শতাংশ, নিজের লোকদের মাধ্যমে ৬৭ দশমিক ১ শতাংশ, কাজের ক্ষেত্রে ৫৫ দশমিক ৩ শতাংশ ও প্রতিষ্ঠানে ২৬ দশমিক ৯ শতাংশ শিশু নির্যাতিত হচ্ছে। পাশাপাশি যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছে ৪৮ দশমিক ৩ শতাংশ শিশু। তারা সবচেয়ে বেশি যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছে বাড়িতে। এর পরিমাণ ৫৫ শতাংশ। এর বাইরে নিজের লোকদের দ্বারা, কাজের ক্ষেত্র ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছে শিশুরা।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার এস এম ফজলুর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক খান মোতাহার হোসেন ও জেলা শিশুবিষয়ক কর্মকর্তা আবু আলম।
সভা সঞ্চালনা করেন ‘পরিবর্তন খুলনা’র নির্বাহী পরিচালক এম নাজমুল আযম। এতে সভাপতিত্ব করেন পরিবর্তন খুলনার সভাপতি অজন্তা দাস।
বক্তারা বলেন, দেশে দিন দিন শিশু নির্যাতনের পরিমাণ বাড়ছে। বিশেষ করে মেয়েশিশুরা নানাভাবে যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছে। তাই শিশু সুরক্ষা ও অধিকার প্রতিষ্ঠায় বিভিন্ন সামাজিক উদ্যোগ নিতে হবে।
পাশাপাশি শিশুদের জন্য মানসম্মত শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, নিরাপত্তা, বিনোদন, খেলাধুলা, বাল্যবিবাহ রোধ, শিশুবান্ধব নীতি বাস্তবায়নসহ শিশুর বিকাশের জন্য সমন্বিত উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান তাঁরা।