গ্রেপ্তার হননি প্রধান অভিযুক্ত, তদন্ত কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার

অপরাধ
প্রতীকী ছবি

কুমিল্লার দেবীদ্বারে মামলা প্রত্যাহার না করায় এক নারীকে মারধরের অভিযোগে করা মামলার চার দিনেও প্রধান অভিযুক্ত গ্রেপ্তার হননি। ওই নারীর কিশোরী মেয়েকে ধর্ষণচেষ্টা ও শ্লীলতাহানির অভিযোগে প্রথমে মামলা করা হয়। সেই মামলা প্রত্যাহার না করায় সড়কের মধ্যে ফেলে ওই নারীকে মারধর করা হয় অভিযোগে আরেকটি মামলা হয়। এদিকে প্রথম মামলার তদন্ত কাজে ধীরগতির কারণে তদন্ত কর্মকর্তা দেবীদ্বার থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ওমর ফারুককে প্রত্যাহার করা হয়েছে। গতকাল শনিবার রাতে তাঁকে কুমিল্লা পুলিশ লাইনসে যুক্ত করা হয়।

প্রথম মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, চলতি বছরের ২৪ মে কিশোরীকে তুলে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা ও শ্লীলতাহানি করেন কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলার মো. হাসান। এ ঘটনায় গ্রামবাসী বিচার করবে বলে আশ্বাস দিলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। পরে কিশোরীর বাবা বাদী হয়ে গত ৯ জুন দেবীদ্বার থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মো. হাসানের বিরুদ্ধে ধর্ষণচেষ্টা ও শ্লীলতাহানির মামলা করেন।

মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পান দেবীদ্বার থানার এসআই ওমর ফারুক। দীর্ঘ সময়েও তিনি মামলার আসামি হাসানকে গ্রেপ্তার করতে পারেননি। গ্রামবাসী ও ভুক্তভোগীর পরিবারের অভিযোগ, অনৈতিক সুবিধা নিয়ে আসামিকে গ্রেপ্তার করেননি তদন্ত কর্মকর্তা। তবে অভিযোগের বিষয়ে ওমর ফারুক বলেন, ‘আসামি পলাতক থাকায় গ্রেপ্তার করতে পারিনি। আমি কোনো ধরনের অনৈতিক সুবিধা নিইনি।’

ভুক্তভোগী কিশোরীর পরিবারের দাবি, মামলা তুলে নিতে কিশোরীর পরিবারকে চাপসহ নানা ধরনের হুমকি দিতে থাকেন হাসান ও তাঁর পরিবারের লোকজন। এতেও মামলা তুলে না নেওয়ায় ২০ আগস্ট দুপুরে হাসানের বড় ভাই কাউছার ওই কিশোরীর মাকে সড়কে পেয়ে লাঠিপেটা করেন। নির্যাতনের ৩২ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ২৬ আগস্ট স্থানীয় এক যুবক ফেসবুকে পোস্ট করলে তা ছড়িয়ে পড়ে।

ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর ২৬ আগস্ট বিকেলে দেবীদ্বার থানার এসআই মাহবুবুর রহমানের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ওই নারীর বাড়িতে যায়। তাঁদের মামলা করতে বলে পুলিশ। ওই রাতেই নির্যাতনের শিকার নারীর স্বামী ও কিশোরীর বাবা বাদী হয়ে দেবীদ্বার থানায় মারধরের অভিযোগে আরেকটি মামলা করেন। মামলায় মো. হাসান, তাঁর ভাই মো. কাউছারসহ আটজনকে আসামি করা হয়। এই মামলায় এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশ ও র‍্যাব পৃথক অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করে। আদালতের মাধ্যমে তাঁদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

মামলার বাদী বলেন, ‘হাসান আমার মেয়েকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। এ নিয়ে মামলা করি। এরপরও পুলিশ আসামিকে গ্রেপ্তার করেনি। গ্রেপ্তার না করার কারণে ২০ আগস্ট আমার স্ত্রীকে লাঠিপেটা করে তারা। প্রথম ঘটনায় ঢিলেমি না করলে দ্বিতীয় ঘটনা ঘটত না।’

দেবীদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আরিফুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, মামলার নতুন তদন্ত কর্মকর্তা দেবীদ্বার থানার এসআই মাহবুবুর রহমান। মামলার অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।