নারায়ণগঞ্জ শহরের পশ্চিম তল্লা এলাকায় বাইতুস সালাত জামে মসজিদে বিস্ফোরণে হতাহতের ঘটনায় গ্রেপ্তার বিদ্যুতের এক মিস্ত্রিকে দুই দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। আজ রোববার বিকেলে নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কাওসার আলমের আদালতে পাঁচ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানানো হলে শুনানি শেষে তাঁর দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়।
ওই বিদ্যুৎ–মিস্ত্রির নাম মোবারক হোসেন (৪০)। তিনি শহরের পশ্চিম তল্লা এলাকার আবদুল হাইয়ের ছেলে। শনিবার বিকেলে শহরের পশ্চিম তল্লা এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। রোববার দুপুরে তাঁকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন ওই ঘটনায় করা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডির পরিদর্শক বাবুল হোসেন।
সিআইডি পরিদর্শক বাবুল হোসেন জানান, বাইতুস সালাত জামে মসজিদে দুটি বৈদ্যুতিক সংযোগ রয়েছে। যার একটি সংযোগ অবৈধ বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। মসজিদের ভেতরে উন্মুক্ত স্থানে সার্কিট ব্রেকার, চারটি কাট আউট, একটি লাইন চেঞ্জ বক্স লাগানো হয়েছে, যা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ ও নিয়মবহির্ভূত। অবৈধ সংযোগ নেওয়া থেকে শুরু করে সার্কিট ব্রেকার ও কাট আউটে তার লাগানোসহ মসজিদের যাবতীয় ওয়্যারিং মোবারক হাসেন করেছেন। গতকাল বিকেলে শহরের পশ্চিম তল্লা এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। অবৈধ বৈদ্যুতিক সংযোগ জানা সত্ত্বেও মসজিদের মতো গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় উপাসনালয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ও নিয়মবহির্ভূতভাবে কাজ করেছেন তিনি। যদি মসজিদের ভেতরে কাট আউট স্থাপন করা না হতো, তাহলে বিদ্যুতের লাইন পরিবর্তনের সময় বিদ্যুতের স্পার্ক হতো না এবং এভাবে একে একে ৩৩ জনের মৃত্যু হতো না। সিআইডির তদন্তে তাঁর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য–প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে। এ ঘটনায় আরও তথ্য–উপাত্ত সংগ্রহ এবং অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগের সঙ্গে কারা জড়িত, তা জানার জন্য তাঁকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন জানানো হয়েছে।
এদিকে গ্যাসের পাইপলাইন স্থাপনে অবহেলার অভিযোগে তিতাস গ্যাস ফতুল্লা আঞ্চলিক অফিসের বরখাস্ত হওয়া চার কর্মকর্তাসহ আটজনকে গ্রেপ্তার করে গতকাল শনিবার জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুই দিনের রিমান্ডে নিয়েছে সিআইডি।
৪ সেপ্টেম্বর শহরের পশ্চিম তল্লা এলাকায় গ্যাসলাইনের লিকেজ থেকে মসজিদে বিস্ফোরণে ১ শিশুসহ ৩৭ জন দগ্ধ হন। ওই বিস্ফোরণে ছয়টি এসি মেশিনসহ জানালার কাঁচ ভেঙে গেছে। ওই ঘটনায় শনিবার পর্যন্ত ১ শিশুসহ ৩৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। রাজধানীর শেখ হাসিনা বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে এখনো চিকিৎসাধীন তিনজন। তাঁদের অবস্থাও সংকটাপন্ন।
বিস্ফোরণের ওই ঘটনায় ফতুল্লা মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) হুমায়ুন কবির বাদী হয়ে তিতাস গ্যাস, ডিপিডিসি, মসজিদ কমিটিসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অবহেলাজনিত অপরাধে মামলা করেন। পরবর্তী সময়ে মামলাটির দায়িত্বভার নেয় সিআইডি।