হবিগঞ্জে বিএনপির নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা ও গুলি ছোড়ার ঘটনার প্রতিবাদে আজ রোববার সিলেট বিভাগের চার জেলায় দলটির বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ করার কথা। কিন্তু হবিগঞ্জেই দলটি কোনো কর্মসূচি পালন করতে পারেনি। দলীয় কর্মীরা বলছেন, তাঁদের মধ্যে মামলা ও গ্রেপ্তার–আতঙ্ক বিরাজ করছে। তাই অধিকাংশ নেতা-কর্মী এলাকা ছেড়ে চলে গেছেন।
আজ সকাল পর্যন্ত বিএনপির ২৬ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সকালে শহরের শায়েস্তানগর এলাকায় অবস্থিত জেলা বিএনপির অফিসে গিয়ে দেখা যায়, বিপুলসংখ্যক পুলিশ কার্যালয়টি ঘিরে রেখেছে। কার্যালয়ে কোনো নেতা-কর্মী নেই।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, কেন্দ্রের নির্দেশনা অনুযায়ী গত বুধবার বিকেলে হবিগঞ্জ জেলা সদরে এক সমাবেশের আয়োজন করে জেলা বিএনপি। এ সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন খন্দকার মোশারফ হোসেন। বিএনপি পৌরসভার মাঠে এ সমাবেশের জন্য অনুমতি চায়, কিন্তু প্রশাসন অনুমতি দেয়নি। পরে বিএনপি শহরের শায়েস্তানগর এলাকায় অবস্থিত জেলা বিএনপির কার্যালয়ের সামনে সমাবেশের প্রস্তুতি নেয়।
সমাবেশস্থলে বিএনপির নেতা-কর্মীরা আসতে চাইলে তাতে বাধা দেয় পুলিশ। এ নিয়ে ওই দিন বেলা আড়াইটায় পুলিশ ও বিএনপির নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ সময় পুলিশ রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করে। সংঘর্ষকালে ১৫ জন পুলিশসহ বিএনপির শতাধিক নেতা–কর্মী আহত হন। পুলিশ ১১ জন নেতা–কর্মীকে গ্রেপ্তার করলে এ সমাবেশ পণ্ড হয়ে যায়।
এ ঘটনার পরদিন বৃহস্পতিবার হবিগঞ্জ সদর থানায় ৭০ জনের নামে এবং অজ্ঞাত পরিচয়ের আরও ২ হাজার জনকে আসামি করে পুলিশ একটি মামলা করে। হবিগঞ্জের এ ঘটনার প্রতিবাদে আজ বিএনপি সিলেট বিভাগের চার জেলায় বিক্ষোভ কর্মসূচির ঘোষণা দেয়।
বিএনপির কেন্দ্রীয় সমবায়বিষয়ক সম্পাদক ও হবিগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র জিকে গউছ বলেন, হবিগঞ্জে বিএনপির সমাবেশে পুলিশ হামলার পর দুই হাজার নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে উল্টো তাঁদের হয়রানি করছে। প্রতিদিন পুলিশ নেতা–কর্মীদের বাড়িঘরে অভিযান চালাচ্ছে। গ্রেপ্তারের ভয়ে দলের অধিকাংশ নেতা-কর্মী আজ ঘরছাড়া।
হবিগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মাসুক আলী জানান, নিরাপত্তার কথা বিবেচনায় নিয়ে বিএনপির কার্যালয়ের সামনে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পুলিশ আক্রান্ত হওয়ার মামলায় এখন পর্যন্ত ২৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।