‘এই রুটে চলতে হলে মাসিক চাঁদা দিতে হবে ২০ হাজার টাকা’, এমন দাবি করে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়ায় ফেরির জন্য অপেক্ষমাণ একটি মাছবাহী ট্রাকে চাঁদা চাইতে গিয়েছিল তরুণদের একটি দল। এ নিয়ে চালকের সঙ্গে কথা-কাটাকাটির মধ্যেই জড়ো হন স্থানীয় লোকজন। পরে তাঁরা সাতজনকে আটক করে পুলিশে খবর পাঠান। এরপর ঘটনাস্থলে এসে অভিযান চালিয়ে পুলিশ আরও ১০ জনকে আটক করে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে এ ঘটনা ঘটে।
গতকাল রাতে এ ঘটনায় মাছবাহী ট্রাকের চালক শরিফুল ইসলাম আটক ১৭ জনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা করেছেন। এ মামলায় ওই ১৭ জনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আজ বুধবার আদালতে পাঠানো হয়েছে।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন দৌলতদিয়ার ওমর আলী মোল্লা পাড়ার রাজিব মণ্ডল (২৩), মজিদ শেখের পাড়ার আজিজুল ইসলাম (২৬), শামসু মাস্টার পাড়ার বাহাদুর খান (৩০), শাহাদৎ মেম্বার পাড়ার মো. হাফিজ (২৫), গোয়ালন্দ পৌরসভার ইবাদ আলী মিস্ত্রি পাড়ার রাসেল মণ্ডল (২১), দৌলতদিয়া ফেলু মোল্লার পাড়ার মো. আলামিন (২৭), ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার দুর্গাপুর গ্রামের রাজু শেখ (৩১), গোয়ালন্দ উপজেলার অম্বলপুর গ্রামের বিল্লাল হোসেন (২৪), দৌলতদিয়া ছিদ্দিক কাজী পাড়ার মোস্তফা শেখ (২৬), সোহরাব মণ্ডল পাড়ার খোকন ফকির (২২), জলিল সরদার পাড়ার দেলোয়ার সরদার (২৪), ইদ্রিস মোল্লার পাড়ার জুয়েল শেখ (২১), ছাত্তার মেম্বার পাড়ার টিটু শেখ (২০), গোয়ালন্দ পৌরসভার দেওয়ান পাড়ার মিন্টু ফকির (২৫), উত্তর দৌলতদিয়া হোসেন মণ্ডল পাড়ার আতিয়ার রহমান (২৫), সাহাজদ্দিন ব্যাপারী পাড়ার সাগর বিশ্বাস (২০) ও শাহাদৎ মেম্বার পাড়ার স্বপন ব্যাপারী (১৯)।
মাছবাহী ট্রাকের চালক শরিফুল ইসলাম জানান, যশোরের মনিরামপুর থেকে গতকাল সন্ধ্যায় মাছ বোঝাই করে সিলেটের উদ্দেশে রওনা হন তিনি। রাত ১১টার দিকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের দৌলতদিয়া ক্যানাল ঘাট এলাকায় পৌঁছালে যানজট দেখা দেয়। এ সময় একদল তরুণ গাড়ির কাছে এসে ‘মাছের গাড়ি এই রুট দিয়ে চলতে হলে নিয়মিত মাসিক ২০ হাজার টাকা দিতে হবে’ বলে চাঁদা দাবি করে। এ নিয়ে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে চালককে মারধর ও ট্রাকের লুকিং গ্লাস ভেঙে ফেলেন তাঁরা। পরে চালক তাঁর কাছে থাকা চার হাজার টাকা তরুণদের দেন। বাকি আরও ১৬ হাজার টাকা দ্রুত পরিশোধের জন্য শাসাতে থাকেন তাঁরা। এরই মধ্যে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে হাতেনাতে সাত তরুণকে আটক করেন। বাকিরা দৌড়ে পালিয়ে যান। এ বিষয়ে গোয়ালন্দ ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল তায়াবীর জানান, গতকাল দিবাগত রাতে মাছবাহী গাড়িতে চাঁদাবাজির ঘটনার অভিযোগ পান পুলিশ সুপার (এসপি) মিজানুর রহমান। পরে তাঁর নির্দেশে রাতভর দৌলতদিয়ার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ১০ জনকে আটক করা হয়। মোট আটক ১৭ জনই দৌলতদিয়া ঘাট এলাকার চিহ্নিত দালাল।