গাড়ি উঠলে দুলতে থাকে সেতু, দুর্ঘটনার শঙ্কা

জরাজীর্ণ সেতুতে যে কোনো সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। সম্প্রতি পিরোজপুরের টোনা খালে
ছবি: প্রথম আলো

পিরোজপুর সদর উপজেলার টোনা খালের লোহার সেতুটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। যানবাহন উঠলে দুলতে থাকে সেতুটি। তবু ঝুঁকি নিয়ে সেতুটি দিয়ে যানবাহন চলাচল করছে। জরুরি ভিত্তিতে সেতুটি সংস্কার বা নতুন সেতু নির্মাণ করা না হলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা রয়েছে।

পিরোজপুর-হুলারহাট-শ্রীরামকাঠি-স্বরূপকাঠি সড়কের পিরোজপুর সদর উপজেলার টোনা খালের ওপর দুই দশক আগে লোহার সেতুটি নির্মাণ করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। পরে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হয় সেতুটি। গত রোববার সকালে গিয়ে দেখা যায়, টোনা সেতুর লোহার খুঁটি কয়েকটি স্থানে দেবে গেছে। জরাজীর্ণ সেতুতে ফাটলও ধরেছে। সেতুর ওপর যানবাহন উঠলে সেটি দুলতে থাকে। যানবাহনের চালকদের সতর্ক করতে সেতুর দুই প্রান্তে ‘ঝুঁকিপূর্ণ সেতু’ লিখে সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দিয়েছে সওজ।

সওজের পিরোজপুর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এক বছর আগে ওই সড়কের টোনা খালের ওপর নির্মিত সেতুটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়ে। সম্প্রতি পিরোজপুর জেলার চারটি জেলা মহাসড়কের যথাযথ মান ও প্রশস্ততা উন্নীতকরণে একটি উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) তৈরি করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। ওই প্রকল্পের মধ্যে টোনা খালের ওপর নতুন করে ৭৫ মিটার দৈর্ঘ্যের গার্ডার সেতু নির্মাণের ডিপিপিও তৈরি করা হয়েছে।

টোনা গ্রামের মো. ইয়াসিন (২২) বলেন, ‘টোনা খালের সেতুটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ সেতু পার হয়ে আমরা হাটবাজার, অফিস–আদালত, স্কুল–কলেজ ও হাসপাতালে যাতায়াত করি। সেতুটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়ার পরও ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চলাচল করছে। এতে যেকোনো সময় সেতু ভেঙে যেতে পারে। এটি ভেঙে গেলে স্থানীয় কয়েকটি গ্রামের মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়বে।’

ব্যাটারিচালিত ইজিবাইকচালক আবুল কালাম বলেন, ‘প্রতিদিন কয়েক শ যানবাহন টোনা সেতু পার হয়ে পিরোজপুর সদর থেকে কলাখালী এবং নাজিরপুরের শ্রীরামকাঠি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম ও হাটবাজারে যাতায়াত করে। এক বছর ধরে সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ। কয়েক মাস ধরে একেবারে নড়বড়ে হয়ে পড়েছে। যানবাহন ওপরে উঠলে দুলতে থাকে সেতুটি। বাধ্য হয়ে আমরা জরাজীর্ণ সেতুটি দিয়ে যাতায়াত করছি।’

টোনা গ্রামের মুদিদোকানি আকব্বর আলী শেখ বলেন, ‘সেতুটি যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এরপরও সেতুটি দিয়ে দিনে ও রাতে মালবাহী গাড়িসহ যাত্রীবাহী ইজিবাইক, রিকশা ও মোটরসাইকেল চলাচল করছে। গাড়ি তো দূরের কথা, একসঙ্গে কয়েকজন হেঁটে গেলেও সেতুটি দুলতে থাকে। আমরা নতুন সেতু নির্মাণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের কাছে অনুরোধ করেছি।’

সওজের পিরোজপুর কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী তুহিন আল মামুন বলেন, জেলার চারটি সড়ক এবং সড়কের ২৯টি সেতু ও ৪৭টি কালভার্ট নির্মাণের জন্য উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) তৈরি করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। ওই প্রকল্পে টোনা খালের ওপরের সেতুটিও রয়েছে। প্রকল্পটি অনুমোদিত হলে টোনা খালের সেতুটির স্থলে নতুন নির্মাণ করা হবে।