বকেয়া বেতনের দাবিতে গাজীপুর মহানগরীর সারাবো এলাকায় অবস্থিত বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের শ্রমিকেরা বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ করেছেন।
আজ মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে পাঁচটা থেকে শ্রমিকেরা বিক্ষোভ শুরু করেন। কারখানাটি সালমান এফ রহমান ও সোহেল এফ রহমানের মালিকানাধীন।
কারখানা শ্রমিক ও পুলিশ জানায়, গাজীপুর মহানগরীর কাশিমপুরের সারাবো এলাকায় অবস্থিত বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের বেশ কয়েকটি কারখানা রয়েছে। এসব কারখানায় কয়েক হাজার শ্রমিক কাজ করেন। কয়েক দিন ধরে শ্রমিকেরা গত মাসের বেতন–ভাতা প্রদানের দাবি জানিয়ে আসছেন। তাঁদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে আজ বেতন দেওয়ার কথা জানায় কারখানা কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সারা দিনে কিছু শ্রমিককে বেতন দেওয়া হলেও বেশির ভাগ শ্রমিক বেতন পাননি। ফলে কারখানা ছুটির পর বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে শ্রমিকেরা কারখানার প্রধান ফটকের সামনে অবস্থানে নিয়ে বিক্ষোভ করেন। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা কারখানায় ভাঙচুর চালান।
একপর্যায়ে কালিয়াকৈর-নবীনগর সড়কে অবরোধ করেন। এতে ওই সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় কাশিমপুর থানা ও শিল্পপুলিশ শ্রমিকদের বুঝিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হয়। শ্রমিকেরা কারখানার ভেতরে বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাকে অবরুদ্ধ করে রেখেছেন।
কারখানার শ্রমিক কবির হোসেন জানান, তাঁদের কারখানার শ্রমিকদের ৫ তারিখে বেতন পরিশোধ করার কথা ছিল। কিন্তু কর্তৃপক্ষ বেতন পরিশোধ করেনি। পরে তারা আজ বেতন পরিশোধ করার কথা বলে। তবে সকালে অল্পসংখ্যক শ্রমিককে বেতন দেওয়া হয়েছে।
ইসমাইল হোসেন নামের এক শ্রমিক বলেন, ‘আমাদের দোকানে বাকি থাকে, বাসা ভাড়া দিতে হয়। গ্রামের কিছু টাকা পাঠাতে হয়। সময়মতো বেতন না পেলে আমাদের আর কিছুই করার থাকে না। পাওনাদারদের বাজে কথা শুনতে হয়। বাধ্য হয়ে রাস্তায় নামতে হয়েছে।’
আরেক শ্রমিক আকবার আলী জানান, বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে চার দফা দাবিতে শ্রমিকেরা গত রোববারও বিক্ষোভে করেছেন। তাঁদের প্রধান দাবিগুলো ছিল, সময়মতো বেতন প্রদান, শ্রমিক ছাঁটাই বন্ধ, চাকরি ছেড়ে দেওয়া শ্রমিকদের পে–ফান্ডের সঠিক অর্থ প্রদান এবং ছুটির টাকার যথাযথ ব্যবস্থা নিশ্চিত করা। ওই দিনই শ্রমিকদের কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দিয়েছিল যে আজ তাঁদের পাওনাদি পরিশোধ করা হবে। কিন্তু আজ বেতন-ভাতা না পেয়ে আন্দোলনে নামেন তাঁরা।
এ ব্যাপারে বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক কর্তৃপক্ষের কারও সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।
কাশিমপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সেনাবাহিনী, বিজিবি ও পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়েছে এবং শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনার চেষ্টা করছে।