গাইবান্ধার জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। জেলার সব নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা, ঘাঘট, করতোয়া নদী তীরবর্তী জেলার চারটি উপজেলার ২৬টি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। এসব ইউনিয়নের ৩০ হাজার ৮৭৬ পরিবারের ১ লাখ ২২ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।
বন্যার্ত মানুষেরা ব্রহ্মপুত্র বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ও বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নিয়েছেন। এর আগে যেসব এলাকা থেকে পানি নেমে গিয়েছিল, সেসব এলাকা আবার বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে। ঘাঘট নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় শহরের ডেভিট কোম্পানি এলাকায় শহররক্ষা বাঁধ ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে।
আজ বুধবার সকাল ৬টায় ব্রহ্মপুত্র নদের পানি ফুলছড়িঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ১১৩ সেন্টিমিটার ও ঘাঘট নদীর পানি জেলা শহরের নতুন ব্রিজ পয়েন্টে বিপৎসীমার ৮৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। তবে করতোয়া নদীর পানি গোবিন্দগঞ্জের কাটাখালি পয়েন্টে বিপৎসীমার ৪০ সেন্টিমিটার এবং তিস্তার পানি কাউনিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ২৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোখলেছুর রহমান বলেন, অবিরাম বর্ষণ ও উজানের ঢলে প্রতিটি নদ-নদীর পানি বেড়েছে। যেভাবে পানি বাড়ছে, তাতে বড় বন্যা হতে পারে। তিনি বলেন, গত বছরের বন্যার মতো এবারও ভয়াবহ বন্যার আশঙ্কা করা হচ্ছে। নদ-নদীতে পানি বৃদ্ধির ফলে নদী ভাঙন শুরু হয়েছে। গাইবান্ধা সদর, সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি ও সাঘাটা উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়ন ভাঙনের শিকার হচ্ছে।
বন্যাকবলিত এলাকাগুলোয় বিশুদ্ধ পানি, খাদ্য, শিশু খাদ্য, গোখাদ্য, নারীদের ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য সামগ্রী ও পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থার সংকট দেখা দিয়েছে। শুকনো খাবার ও জ্বালানির অভাবে খাদ্য সংকটে পড়েছে বন্যার্ত মানুষ। অনেকে বাড়িঘর ছেড়ে গরু-ছাগল নিয়ে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ও উঁচু এলাকায় আশ্রয় নিতে শুরু করেছে। রাস্তাঘাট ডুবে যাওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত।