ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে গাইবান্ধার নদ–নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত আছে। গাইবান্ধা সদর, সুন্দরগঞ্জ ও ফুলছড়ি উপজেলার নদীবেষ্টিত ১৬৫টি চরের নিম্নাঞ্চল ডুবতে শুরু করেছে। চরাঞ্চলের রাস্তাঘাট ডুবে যাওয়ায় সেখানকার সড়ক যোগাযোগ ব্যাহত হয়ে পড়েছে। পানি বাড়ার কারণে ব্রহ্মপুত্র ও যমুনা নদীর ভাঙনও শুরু হয়েছে।
গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানিয়েছে, গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা থেকে আজ শুক্রবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্রের পানি ফুলছড়ি উপজেলার তিস্তামুখ পয়েন্টে ৫৩ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ৫০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ ছাড়া ঘাঘট নদীর পানি জেলা শহরের নতুন ব্রিজ পয়েন্টে ৩২ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ৪২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে, তিস্তার পানি সুন্দরগঞ্জ পয়েন্টে ২০ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ৪২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে এবং করতোয়া নদীর পানি বিপৎসীমার ১৮০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
ফুলছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ আলাউদ্দিন জানান, ব্রহ্মপুত্রের পানি বাড়ার কারণে উপজেলার উড়িয়া ইউনিয়নের রতনপুর, উত্তর উড়িয়া ও জিগাবাড়ী, ফজলুপুর ইউনিয়নের পূর্ব খাটিয়ামারী, মধ্য খাটিয়ামারী, পশ্চিম খাটিয়ামারী, তালতলা, কাউয়াবাধা ও নিশ্চিন্তপুর, গজারিয়া ইউনিয়নের গলনারচর ও জিয়াডাঙ্গা চর এলাকায় নিম্নাঞ্চল ডুবতে শুরু করেছে। পাশাপাশি নদীভাঙন দেখা দিয়েছে। গত কয়েক দিনে এসব এলাকার প্রায় ১৫০টি পরিবার নদীভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের তালিকা সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের কাছে চাওয়া হয়েছে। শিগগিরই তাঁদের ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হবে।
গাইবান্ধা সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শরীফুল আলম বলেন, উপজেলার কামারজানি ও মোল্লারচর ইউনিয়নের বেশ কিছু চরের নিম্নাঞ্চলের রাস্তাঘাট ডুবতে শুরু করেছে। এ ছাড়া কামারজানি ইউনিয়নের কুন্দেরপাড়া চরে নদীভাঙন দেখা দিয়েছে।
সুন্দরগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ-আল-মারুফ বলেন, তিস্তা নদীর পানি বাড়ার কারণে ছোট ছোট চরের রাস্তাঘাট ডুবে গেছে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে বেশ কয়েকটি চরের মানুষ।
গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবু রায়হান প্রথম আলোকে বলেন, নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে। আপাতত ব্রহ্মপুত্রের পানি কমার সম্ভাবনা নেই। তিনি আরও বলেন, গাইবান্ধা সদর উপজেলার বাগুড়িয়া থেকে কামারজানি পর্যন্ত ব্রহ্মপুত্র বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের বেশ কিছু জায়গা বৃষ্টির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ওই সব জায়গা দ্রুত মেরামত করা হচ্ছে। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, কোনো নদীর পানিই বিপৎসীমা অতিক্রম করেনি।