মেহেরপুরের গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা কর্মকর্তা (এমও) এস এম তানভির আহমেদকে তাঁর কক্ষে ঢুকে মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক দেলোয়ার হোসেন সোমবার দুপুরে এই কাণ্ড ঘটান বলে অভিযোগ উঠেছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, সোমবার দুপুরে চিকিৎসক তানভির আহমেদ জরুরি বিভাগে নিজের কক্ষে বসে রোগী দেখছিলেন। এ সময় গাংনী উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন ৫-৬ জন লোক নিয়ে জোর করে ওই কক্ষে প্রবেশ করে। রোগীদের সামনে সরকারি কাগজ ছিঁড়ে ফেলেন। পরে তানভির আহমেদের অ্যাপ্রোন ধরে টানাটানি করে মারধর শুরু করেন। এসব ঘটনায় অভিযোগ করলে খুন ও গুম করার হুমকি দিয়ে যান তাঁরা।
চিকিৎসক তানভির আহমেদ বলেন, স্বেচ্ছাসেবক লীগের ওই নেতা তাঁর ডায়াগনস্টিক সেন্টারে রোগী পাঠানোর জন্য বেশ কয়েক মাস ধরে চাপ দিচ্ছিলেন। অযথা রোগীদের অপ্রয়োজনীয় পরীক্ষা করানোর জন্যও চাপ দিচ্ছিলেন। তাতে রাজি না হওয়ায় মারধরের ঘটনা ঘটে। এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা রিয়াজুল আলমকে তিনি একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
তবে অভিযুক্ত স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা দেলোয়ার হোসেন দাবি করেন, ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক হিসেবে নয়, তিনি হাসপাতালে গিয়েছিলেন একজন নাগরিক হিসেবে। সেখানে মারধরের কোনো ঘটনা ঘটেনি।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা রিয়াজুল আলম বলেন, মারধরের ঘটনায় একটি অভিযোগ পেয়েছেন। অভিযোগ পাওয়ার পর পুলিশকে জানালে হাসপাতালে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। হাসপাতাল ক্যাম্পাসে বহিরাগতরা এ ধরনের আচরণ করতে পারেন না। মঙ্গলবার এ বিষয়ে তদন্ত কমিটি করা হবে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একজন নার্স বলেন, ‘হাসপাতালে জরুরি বিভাগে দায়িরত্বরত চিকিৎসককে মারধর করা যুবক হাসপাতাল থেকে রোগী ভাগিয়ে নেওয়া দালাল চক্রের সদস্য। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। এমন হলে আমরা দায়িত্ব পালন করব কী করে?’
মেহেরপুর সিভিল সার্জন নাসির উদ্দিন বলেন, তিনি শুনেছেন ঘটনার পর থেকে অন্য চিকিৎসকদের পাশাপাশি জরুরি বিভাগের চিকিৎসকেরাও দায়িত্ব পালনে অনীহা প্রকাশ করছেন। তাঁরা মামলা করার তাগিদ দিচ্ছেন। খুব শিগগির এ ব্যাপারে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওবাইদুর রহমান বলেন, হাসপাতালে মারধরের ঘটনার পরে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সরকারি কাজে বাধা দেওয়ায় আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।