ঝিনাইদহ-কোটচাঁদপুর সড়ক

গর্ত খুঁড়ে রেখে কাজও বন্ধ

গর্তে পড়ে মাঝেমধ্যে যানবাহনের চালক ও পথচারীরা ভোগান্তিতে পড়ছেন। বৃষ্টিতে ভোগান্তি বেড়েছে।

সংস্কারের জন্য সড়কের দুই পাশে খুঁড়ে রাখা হয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়ছেন এলাকার লোকজন। গত সোমবার ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বেলেখাল এলাকায়
ছবি: প্রথম আলো

সড়ক সংস্কারকাজের জন্য দুই পাশে গর্ত খোঁড়া হয়েছে। তবে তিন মাস ধরে ওই কাজ বন্ধ রেখেছেন ঠিকাদার। এদিকে ওই গর্তে পড়ে মাঝেমধ্যে যানবাহনের চালক ও পথচারীরা ভোগান্তিতে পড়ছেন। বৃষ্টিতে ভোগান্তি আরও বেড়েছে। এ চিত্র ঝিনাইদহ-কোটচাঁদপুর ভায়া জিয়ানগর সড়কের প্রায় চার কিলোমিটারের।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) ঝিনাইদহ কার্যালয় সূত্রে জানা জানা যায়, ওই সড়কের ডেফলবাড়িয়া মোড় থেকে বেলেখাল বাজার পর্যন্ত ৩ দশমিক ৭ কিলোমিটার মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ঠিকাদারের সঙ্গে চুক্তিমূল্য ছিল ২ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। ২০২১ সালের ১০ সেপ্টেম্বর কার্যাদেশ দেওয়া হয়। কাজের মেয়াদ শেষ হয়েছে গত মাসের ৯ তারিখে। দ্রুত কাজ শেষ করার জন্য তারা ঠিকাদারকে চিঠি দিয়েছে। চিঠিতে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানানো হয়েছে। দ্রুত ভোগান্তি নিরসন করার চেষ্টা চলছে।

ঝিনাইদহ জেলা শহরের পাগলাকানাই মোড় থেকে একটি সড়ক বেরিয়ে গেছে কোটচাঁদপুর উপজেলার দিকে। সড়কটি শৈলমারী, চণ্ডীপুর, জিয়ানগর, তালসার কুশনা হয়ে কোটচাঁদপুর উপজেলায় মিশেছে। যার দূরত্ব প্রায় ১৬ কিলোমিটার। সড়কটি দুই উপজেলাকে যুক্ত করেছে। সড়কটি দিয়ে প্রায় ৩০টি গ্রামের মানুষ চলাচল করে। চলাচল করে ছোট-বড় সব ধরনের যানবাহন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সদর উপজেলার পাগলাকানাই মোড় থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে ডেলফবাড়িয়া মোড়। ওই মোড় থেকে বেলেখাল বাজার পর্যন্ত সড়ক বেহাল হয়ে পড়েছে। ওই অংশে ছোট-বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। ঠিকমতো যানবাহন চলাচল করতে পারত না। এমনকি পথচারীরা ছিলেন ঝুঁকির মধ্যে। সড়কটি মেরামতের দাবি জানিয়ে আসছিলেন এলাকাবাসী।

বেলেখাল বাজার এলাকার বাসিন্দা নজরুল ইসলাম বলেন, সড়কটি মেরামতের জন্য চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে খোঁড়াখুঁড়ি করা হয়। দু-এক জায়গায় খুঁড়ার পর কাজ বন্ধ হয়ে যায়। এরপর মার্চ মাসে আবারও খোঁড়াখুঁড়ি শুরু হয়। এবার শৈলমারী বাজার থেকে বেলেখাল পর্যন্ত রাস্তার দুই পাশে বড় বড় গর্ত তৈরি করা হয়েছে। কয়েক দিনের মধ্যে গর্তগুলো করে আবারও কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়।

কালুহাটি গ্রামের শিমুল বিশ্বাস বলেন, ঠিকাদারের লোকজন প্রথমে সড়কের দুই পাশ খুঁড়ে ফেলেন। এরপর মাঝেমধ্যে সড়কে ইট ফেলা হয়। তিন মাস আগে কাজ বন্ধ করে চলে যান ঠিকাদার। ইট তুলে নেওয়ার জন্য গাড়ি পাঠানো হয়েছিল। তবে এলাকাবাসীর বাধার কারণে ঠিকাদারের লোকজন ইট নিতে পারেননি। গর্তের পাশ ধসে আরও বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।

গত সোমবার গিয়ে দেখা যায়, রাস্তার দুই পাশে গর্ত করে রাখা হয়েছে। এ কারণে পাশাপাশি দুটি যানবাহন যেতে পারছে না। অনেক স্থানে গর্তের পাশ ধসে আরও বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সেসব স্থানে চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে গেছে।

বেলেখাল বাজার এলাকার বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন বলেন, কাজের ক্ষেত্রে দেখা যায় ঠিকাদারের লোকজন একপাশ খুঁড়ে বালুভর্তি করে অপর পাশ খুঁড়ে থাকেন। তাহলে জনগণের এত ভোগান্তিতে পড়তে হয় না। আর এ সড়কে দুই পাশ খুঁড়ে মাসের পর মাস ফেলে রাখা হয়েছে।

সড়ক সংস্কারের কাজ পেয়েছে নড়াইলের রেজাউল আলমের মেসার্স ইডেন এন্টারপ্রাইজ। তবে কাজটি করছেন ঝিনাইদহের ঠিকাদার মুনতাজম রহমান। তিনি ঠিকাদার মিজানুর রহমানের ছেলে।

মুনতাজম রহমান বলেন, লোকবল না পাওয়ায় কাজ এত দিন বন্ধ রাখতে হয়েছে। শ্রমিকেরা বেশির ভাগ মাঠের ধান কাটার কাজে চলে গিয়েছিলেন। দু-এক দিনের মধ্যে কাজ শুরু করতে পারবেন।

এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মনোয়ার উদ্দিন বলেন, ঠিকাদারকে কাজ শেষ করতেই হবে। সড়ক খুঁড়ে রেখে চলে যাওয়ার সুযোগ নেই। কাজ না করলে জামানতের অর্থ বাজেয়াপ্ত করা হবে। মানুষের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে তাঁরা বারবার তাগাদা দিয়ে যাচ্ছেন।