গর্তে ভরা প্রধান সড়ক, দুর্ভোগ সীমাহীন

নেত্রকোনার মদন পৌর শহরের প্রধান সড়কের কয়েকটি স্থানে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টি হলে এসব গর্তে পানি জমে থাকে। এ সময় ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করে যানবাহন। সোমবার দুপুরে পৌরসভার জাহাঙ্গীরপুর এলাকার মহিউদ্দিন মার্কেটের সামনে। ছবি: প্রথম আলো
নেত্রকোনার মদন পৌর শহরের প্রধান সড়কের কয়েকটি স্থানে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টি হলে এসব গর্তে পানি জমে থাকে। এ সময় ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করে যানবাহন। সোমবার দুপুরে পৌরসভার জাহাঙ্গীরপুর এলাকার মহিউদ্দিন মার্কেটের সামনে। ছবি: প্রথম আলো

সড়কের স্থানে স্থানে অসংখ্য ছোট-বড় গর্ত। একটু বৃষ্টি হলেই সেসব গর্তে পানি জমে যায়। এতে বিভিন্ন ধরনের যানবাহনের চালক ও সড়ক ব্যবহারকারী লোকজনকে ভোগান্তির শিকার হতে হয়। এই দুরবস্থা নেত্রকোনার মদন পৌর শহরের প্রধান সড়কের। দীর্ঘদিন ধরে পৌর বাসিন্দারা সংস্কারের দাবি জানিয়ে এলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সড়কটি সংস্কার করছে না।

পৌরসভার কয়েকজন বাসিন্দা, সড়ক ও জনপথ (সওজ) ও পৌরসভা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মদন পৌরসভার প্রধান সড়কটি নেত্রকোনা সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের অধীনে। নেত্রকোনা শহরের বনোয়াপাড়া এলাকা থেকে শুরু হয়ে নেত্রকোনা-মদন সড়কটি প্রায় ২৫ কিলোমিটার দীর্ঘ। ২০১৮ সালে সড়কটি নির্মাণ করা হয়। সড়কের মদন পৌর শহরের জাহাঙ্গীরপুর মহিলা কলেজ মোড় এলাকা থেকে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের চৌরাস্তা মোড় এলাকা পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটারের অবস্থা খুব খারাপ। ওই পথে অন্তত ১০টি বড় গর্ত রয়েছে। প্রতিটি গর্ত প্রায় ১০ থেকে ১২ ফুট লম্বা ও ১ ফুটের বেশি গভীর। এ ছাড়া সড়কে বিভিন্ন স্থানে ১ থেকে ৩ ফুট পরপর অসংখ্য ছোট-বড় গর্ত রয়েছে। সড়কের নিচে ও দুই পাশে নর্দমার ব্যবস্থা না থাকায় একটু বৃষ্টি হলেই গর্তগুলোয় পানি জমে যায়। রিকশা, ভ্যান, ঠেলাগাড়ি, মোটরসাইকেল, ব্যাটারি ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা, বাস, মালবোঝাই ট্রাক, পিকআপ, লরিসহ অন্যান্য যানবাহন মাঝেমধ্যে এসব গর্তে আটকা পড়ে। যানবাহনের চাকা গর্তে পড়ে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা।

মদন পৌরসভার কয়েকজন বাসিন্দা জানান, পৌরসভার রাস্তার অবস্থা খুব খারাপ। সড়কে প্রায়ই যানজট লেগে থাকে। এতে যাত্রীরা যথাসময়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারেন না। এ ছাড়া গর্তের কারণে রাস্তা উঁচু–নিচু হয়ে থাকায় গাড়ির ঝাঁকুনিতে যাত্রীদের শরীর ব্যথা হয়ে যায়।

গতকাল সোমবার দুপুরে পৌরসভার মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স এলাকায় গর্তে আটকে পড়ে রুবেল মিয়ার মাইক্রোবাস। রুবেল মিয়া বলেন, এই গর্তগুলো অনেক দিন ধরেই সৃষ্টি হয়েছে। এখন পর্যন্ত কেউ গর্তগুলো ভরাট করার কাজ করছে না। জাহাঙ্গীরপুর এলাকার মনিহারি ব্যবসায়ী শফিকুর রহমান আক্ষেপ করে বলেন, ‘সড়কটি নিয়ে এখন এ অঞ্চলের মানুষ রীতিমতো দুঃখে আছে। বর্ষা শুরুর আগেই সড়কটি এমন অবস্থা। কিন্তু কেউ সংস্কার করছে না। ফলে এ সড়ক দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে এলাকাবাসী ভোগান্তি পোহাচ্ছে।’

স্থানীয় স্নাতক শ্রেণির ছাত্র ফয়েজ আহমেদ জানান, সড়কের গর্তে গাড়ি আটকে থেকে সব সময়ই যানজট লেগে থাকে। অনেক সময় গর্তে জমে থাকা কাদাপানি ছিটকে পোশাক নষ্ট হয়। অবস্থা খারাপ হওয়ায় প্রধান এ সড়কটি দিয়ে যানবাহন চলাচল করা তো দূরের কথা হেঁটে চলাই কষ্টকর। এই গর্তগুলো দ্রুত মেরামত করা প্রয়োজন।’

পৌরসভার প্রধান সড়কের শোচনীয় অবস্থার বিষয়ে জানতে চাইলে মেয়র মো. আবদুল হান্নান তালুকদার বলেন, ‘সড়কটি সওজের। নেত্রকোনা সওজের নির্বাহী প্রকৌশলীকে বলা হয়েছে ভাঙা অংশ দ্রুত সংস্কার করার জন্য।’

এ বিষয়ে সওজের নেত্রকোনা কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হামিদুল ইসলাম গতকাল বিকেলে প্রথম আলোকে মুঠোফোনে জানান, ‘মদন থেকে নেত্রকোনা পর্যন্ত ওই সড়কের ৯ কিলোমিটার সংস্কারের জন্য টেন্ডার হয়েছে। বৃষ্টি থাকায় কাজ শুরু করা যাচ্ছে না। আপাতত সড়কের গর্তগুলোতে কিছু খোয়া ও বালু ফেলার সিদ্ধান্ত হয়েছে।’