ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলায় কয়েকজন মুখোশধারী ব্যক্তি শোবার ঘরে ঢুকে এক বৃদ্ধ নারীকে মারধর করে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন ওই নারীর স্বামী। শনিবার গভীর রাতে উপজেলার পাকশিমুল ইউনিয়নের পাকশিমুল গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ওই নারীর নাম সেলেনা বেগম (৬০)। তাঁর স্বামীর নাম কিতাব আলী (৬৫)।
পুলিশ ও গ্রামবাসী সূত্র জানায়, বসতবাড়ির জমি নিয়ে প্রায় ৩০ বছর ধরে পাকশিমুল গ্রামের কৃষক কিতাব আলীর সঙ্গে তাঁর চাচাতো ভাই মোতালিব মিয়ার বিরোধ চলছে। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে ১৫টি মামলা হয়েছে। শনিবার রাত ১০টার দিকে কিতাব আলী ও তাঁর স্ত্রী নিজ বাড়িতে ঘুমিয়ে পড়েন। রাত একটার দিকে কয়েকজন লোক তাঁদের ঘরের দরজায় শব্দ করেন। তখন কিতাব আলী ঘরের দরজা খোলেন। দরজা খোলার পর কিতাব আলীকে টেনেহিঁচড়ে ঘর থেকে বের করে তাঁর মাথায় ও ঘাড়ে আঘাত করে মুখোশ পরা কয়েকজন। স্বামীকে রক্ষা করতে এগিয়ে এলে স্ত্রী সেলেনা বেগমকেও মারধর করা হয়। এ সময় তাঁর চিৎকারে প্রতিবেশীরা এসে তাঁদের উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক সেলেনা বেগমকে মৃত ঘোষণা করেন।
কিতাব আলীর দাবি, তাঁদের ওপর হামলার সময় তিনি মোতালিব মিয়ার কণ্ঠ শুনতে পেয়েছেন। মোতালিবের সঙ্গে আরও পাঁচ–ছয়জন লোক তাঁদের মারধর ও আঘাত করেছেন।
পাকশিমুল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘খবর পেয়ে রাত তিনটার দিকে আমি ওই বাড়িতে যাই। সেখানে গিয়ে স্বামী-স্ত্রীকে ঘরের বাইরে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখি। তখন দুজনের মাথায় পানি দিলে কিতাব আলীর জ্ঞান ফেরে। পরে তাঁদের জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়।’
এ ঘটনায় কিতাব আলী, অভিযুক্ত মোতালেব মিয়া (৫০) ও তাঁর ছোট ভাই বরকত আলীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। কিতাব আলী বলেন, ‘হামলাকারীদের মধ্যে আমি শুধু মোতালিবের আওয়াজ (কণ্ঠ) ছিনতাম পারছি। পরে আমি আর কিছু কইতাম পারি না।'
সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ এম এম নাজমুল আহমেদ বলেন, বৃদ্ধ নারীর লাশটি জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে আছে। ধারণা করা হচ্ছে, এটি একটি হত্যাকাণ্ড। লাশের মাথার পেছনে আঘাতের চিহ্ন আছে। এ ব্যাপারে হত্যা মামলার প্রস্তুতি চলছে।