গণভোটের বাক্স নিয়ে ৬৯তম দিনে পঞ্চগড়ে হানিফ বাংলাদেশি

গত ২৪ অক্টোবর থেকে মাথায় প্রতীকী ভোটের বাক্স নিয়ে ঘুরছেন হানিফ বাংলাদেশি
ছবি: প্রথম আলো

জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিতের দাবিতে গণভোটের বাক্স মাথায় নিয়ে ৬৯তম দিনে পঞ্চগড়ে এসেছেন মোহাম্মদ হানিফ ওরফে হানিফ বাংলাদেশি (৪০)। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে তিনি পঞ্চগড় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এসে তাঁর ৬৪ জেলা পদযাত্রা কর্মসূচির সমাপ্তি ঘোষণা করেন।

শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন ও ভোটাধিকার নিশ্চিতের দাবিতে গণভোটের বাক্স মাথায় নিয়ে হানিফ বাংলাদেশি গত ২৪ অক্টোবর কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে তাঁর কর্মসূচি শুরু করেন। এর আগে বিভিন্ন ইস্যুতে সারা দেশে পদযাত্রাসহ রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে প্রতিবাদী অবস্থান নিয়ে তিনি ‘হানিফ বাংলাদেশি’ নামে পরিচিতি লাভ করেছেন।

আজ দুপুরে হানিফ বাংলাদেশি গলায় প্রতিবাদী ফেস্টুন ঝুলিয়ে এবং মাথায় প্রতীকী ভোটের বাক্স নিয়ে পঞ্চগড় জেলা শহরের বিভিন্ন এলাকায় ঘোরেন। পরে তিনি পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলামের কাছে রাষ্ট্রপতি বরাবর তাঁর দাবিসংবলিত একটি স্মারকলিপি দেন। এর আগে গত ৬৮ দিনে তিনি ৬৩ জেলায় ঘুরে জেলা প্রশাসকদের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি বরাবর স্মারকলিপি দিয়ে তাঁর এই দাবি জানিয়েছেন।

কর্মসূচি সম্পর্কে হানিফ বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছরে যে দল যখনই রাষ্ট্র ক্ষমতায় এসেছে, সে দলই কমবেশি ভোটাধিকার ও গণতন্ত্রকে বাধাগ্রস্ত করেছে। বর্তমানে দেশের যে পরিস্থিতি, সেটা একদিনে তৈরি হয়নি, সব শাসক দলের অপরাজনীতি এ চরম অবস্থা সৃষ্টি করেছে। এই ভয়াবহ অবস্থা থেকে উত্তরণও একদিনে সম্ভব নয়। রাজনীতিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকবে কিন্তু বাংলাদেশের রাজনীতিতে প্রতিহিংসা, সহিংসতা ও অবিশ্বাসের সংস্কৃতি রয়েছে।

তাঁর মতে, রাজনীতিতে যে আস্থার সংকট সৃষ্টি হয়েছে সেটার জন্য রাজনীতিবিদেরাই দায়ী। এখন জনগণের ভোটাধিকার ও নির্বিঘ্নভাবে ভোট দেওয়ার পরিবেশ সৃষ্টি করতে প্রশাসনকে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করতে হবে এবং একটি শক্তিশালী নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। এ ক্ষেত্রে মহামান্য রাষ্ট্রপতি সব মহলের সঙ্গে আলোচনা করে নির্বাচন কমিশন গঠন করলে এবং সারা দেশে প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করলে জনগণ ভোটের প্রতি আগ্রহী হবে বলে মনে করেন হানিফ বাংলাদেশি।

আজ দুপুর থেকে পঞ্চগড় শহরের বিভিন্ন এলাকায় ঘোরেন হানিফ

একই দাবিতে তিনি আগামী রোববার থেকে বঙ্গভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করবেন। যত দিন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে রাষ্ট্রপতির সংলাপ চলবে, তত দিন এ কর্মসূচি তিনি চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন।

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের মার্চ মাসে হানিফ বাংলাদেশি ভোটাধিকারের দাবিতে টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পায়ে হেঁটে একক পদযাত্রা করেন। একই বছরে নির্বাচন কমিশন অফিসে পচা আপেল দিয়ে প্রতিবাদ করেন। এরপর তিনি দুর্নীতির বিরুদ্ধে ৬৪ জেলায় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে স্মারকলিপি প্রদান করেন এবং জেলায় জেলায় লাল কার্ড প্রদর্শন করেন। নোয়াখালীর বাসিন্দা মোহাম্মদ হানিফ ১৯৯৯ সালে নোয়াখালীর বুলুয়া ডিগ্রি কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করেন। পরে তিনি লেখাপড়া ছেড়ে চট্টগ্রামের একটি প্রতিষ্ঠানে কমিশন এজেন্টের কাজ নেন। প্রতিষ্ঠান থেকে ছুটি নিয়ে ফাঁকে ফাঁকে এই প্রচারণা চালাচ্ছেন তিনি।