পাবনায় সেই আ.লীগ নেতাদের অস্ত্রের লাইসেন্স বাতিলের সুপারিশ

গণপূর্ত ভবনে ঢুকছেন পাবনা সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক ফারুক হোসেন (গোলাপি পাঞ্জাবি), তাঁর পেছনে অস্ত্র হাতে পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এ আর খান (সাদা শার্ট)। তাঁর পেছনে আরেকটি অস্ত্র হাতে জেলা যুবলীগ নেতা শেখ লালু (ডোরাকাটা গেঞ্জি)। ৬ জুন, সিসিটিভি ক্যামেরার দৃশ্য
ছবি: সংগৃহীত

পাবনার গণপূর্ত ভবনে অস্ত্র হাতে মহড়া দেওয়া সেই আওয়ামী লীগ নেতাদের থানায় জমা থাকা দুটি শটগানের লাইসেন্স বাতিলের সুপারিশ করেছে পুলিশ। আজ মঙ্গলবার বিকেলে পাবনার পুলিশ সুপার মহিবুল ইসলাম খান জেলা প্রশাসক বরাবর এই সুপারিশ পাঠিয়েছেন। পুলিশ সুপার মহিবুল ইসলাম খান প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। মহড়াকারীরা অস্ত্র আইনের শর্ত ভঙ্গ করায় এই সুপারিশ করেছেন বলে তিনি জানিয়েছেন।

তবে এ ঘটনায় জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এখনো কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। জানতে চাইলে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা বলেছেন, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নির্দেশনা পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

গণপূর্ত ভবনে অস্ত্র হাতে মহড়া দেওয়া ওই দুই আওয়ামী লীগ নেতা হলেন পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এ আর খান এবং জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শেখ লালু। ১৩ জুন পুলিশের নির্দেশে তাঁরা তাঁদের ব্যবহৃত দুটি শটগান থানায় জমা দেন।

পুলিশ সুপার মহিবুল ইসলাম খান প্রথম আলোকে বলেন, বৈধ অস্ত্র ব্যবহারের কিছু শর্ত রয়েছে। গণপূর্ত ভবনে মহড়া দেওয়া ব্যক্তিরা সেই শর্ত অমান্য করেছেন। ফলে প্রাথমিকভাবে তাঁদের অস্ত্র দুটির লাইসেন্স বাতিলের সুপারিশ করা হয়েছে। গণপূর্ত ভবনে তাঁরা লোকজন নিয়ে কেন গিয়েছিলেন, সে বিষয়টিও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তদন্ত শেষ হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

যোগাযোগ করা হলে বিকেল চারটার দিকে জেলা প্রশাসক কবীর মাহমুদ সুপারিশপত্রটি হাতে পাওয়ার কথা নিশ্চিত করেছেন। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ‘সুপারিশপত্রটির ওপরে “গোপনীয়” কথাটি লেখা রয়েছে। ফলে এ বিষয়ে এখনই কোনো মন্তব্য নয়। আমরা বিষয়টি আমলে নিয়েছি। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

গণপূর্ত ভবনে ঢুকছেন পাবনা জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শেখ লালু (ডোরাকাটা গেঞ্জি)। ৬ জুন, সিসিটিভি ক্যামেরার দৃশ্য

এ প্রসঙ্গে জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল রহিম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা এ ঘটনায় নিন্দা জানাই। এটি দলীয় কোনো বিষয় নয়। পুরোটাই তাঁদের ব্যক্তিগত। আমরা সাংগঠনিকভাবে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করছি। কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগও এ বিষয়ে অবগত আছে। কেন্দ্রীয় দিকনির্দেশনা পেলেই এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

৬ জুন দুপুরে লোকজন নিয়ে গণপূর্ত অধিদপ্তরের পাবনা কার্যালয়ে প্রবেশ করেন সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক ফারুক হোসেন। তাঁর পেছনে শটগান হাতে ছিলেন পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এ আর খান ও জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শেখ লালু।

পরবর্তী সময়ে ভবনে থাকা সিসিটিভি ক্যামেরার একটি ভিডিও ফুটেজ থেকে নেওয়া ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে আলোচনার ঝড় ওঠে। কিছু ঠিকাদার অভিযোগ করেন, ঠিকাদারিকাজের সুবিধা পেতেই আওয়ামী লীগ নেতারা এই মহড়া দিয়েছেন।