খুলনায় পাটকল শ্রমিকদের সড়ক অবরোধে পুলিশের লাঠিপেটা

খুলনায় পাটকল শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ কর্মসূচি চলাকালে পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়। এ সময় কয়েকজন শ্রমিককে গাড়িতে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ। আটরা গিলাতলা, খুলনা, ১৯ অক্টোবর
সাদ্দাম হোসেন

পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী খুলনার আটরা শিল্প এলাকায় খুলনা-যশোর মহাসড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করছিল পাটকল রক্ষায় সম্মিলিত নাগরিক পরিষদ নামের একটি সংগঠন। সোমবার ওই কর্মসূচিতে খুলনার বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ও বিভিন্ন পাটকলের শত শত শ্রমিক অংশগ্রহণ করেন। বেলা ১১টার দিকে শুরু হওয়া ওই কর্মসূচিতে দুপুর পৌনে ১২টার দিকে পুলিশ লাঠিপেটা ও কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়ে। এ সময় কয়েকজন শ্রমিক আহত হয়েছেন বলে দাবি করেছেন সংগঠনটির নেতারা।

বন্ধ ঘোষিত রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল পুনরায় সরকারি ব্যবস্থাপনায় চালু, শ্রমিকদের সব পাওনা পরিশোধসহ ১৪ দফা দাবিতে বেশ কিছুদিন ধরে আন্দোলন করে আসছে সংগঠনটি। এর আগে খুলনা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ঘেরাও, স্মারকলিপি পেশ, সড়ক অবরোধসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। সর্বশেষ শ্রমিকদের নিয়ে খুলনা-যশোর মহাসড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করতে গিয়েছিলেন সংগঠনটির নেতারা।

আন্দোলনরত শ্রমিকদের পুলিশ ছত্রভঙ্গ করে দেওয়ার পর খুলনা–যশোর সড়কে যান চলাচল শুরু হয়। আটরা গিলাতলা, খুলনা, ১৯ অক্টোবর

ওই সংগঠনের আহ্বায়ক কুদরত-ই-খুদার দাবি, শান্তিপূর্ণভাবেই তাঁরা অবরোধ কর্মসূচি পালন করছিলেন। আধা ঘণ্টা পর পুলিশ সেখান থেকে তাঁদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। প্রায় ১৫ মিনিট এভাবে চলার পর হঠাৎ করেই আন্দোলনকারী শ্রমিকদের ওপর চড়াও হয় পুলিশ। এ সময় শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিপেটা ও কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করা হয়। প্রাণ বাঁচাতে শ্রমিকেরা ইস্টার্ন জুট মিলের মধ্যে ঢুকে পড়েন। কিন্তু সেখানে গিয়েও লাঠিপেটা করা হয়েছে। এসব ঘটনায় বেশ কয়েকজন শ্রমিক আহত হয়েছেন।

কুদরত-ই-খুদা বলেন, হামলার পর সবাই ছত্রভঙ্গ হয়ে বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়েছেন। দুপুরের দিকে ওই মিলের মধ্যে তাঁরা প্রতিবাদ সমাবেশ করবেন। আর সন্ধ্যায় বিস্তারিত ঘটনা তুলে ধরে খুলনা সিপিবি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করা হবে।

ঘটনার বিষয়ে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের এডিসি (উত্তর) সোনালী সেন বলেন, ওই অবরোধ কর্মসূচি চলাকালে সড়কের দুই পাশে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়। এ কারণে শান্তিপূর্ণভাবেই শ্রমিকদের মহাসড়ক থেকে তুলে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছিল। এমন সময় আন্দোলনকারীরা পুলিশের ওপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করলে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কাঁদানে গ্যাসের শেল ও কয়েকটি ফাঁকা গুলি ছুড়ে। পরিস্থিতি এখন পুলিশের নিয়ন্ত্রণে আছে বলে তিনি জানান।