২০১৭ সালের ৩ অক্টোবর কুমিল্লা নগরের টমছম ব্রিজ থেকে নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ পর্যন্ত ৫৯ কিলোমিটার সড়কে চার লেন প্রকল্প নেওয়া হয়। আগামী বছরের ৩০ জুন ওই প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
বৈদ্যুতিক খুঁটি সড়ক থেকে না সরানোর কারণে কুমিল্লা-নোয়াখালী চার লেন মহাসড়কের উন্নয়নকাজ ব্যাহত হচ্ছে। কুমিল্লা নগর থেকে বিজয়পুর পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার এলাকায় শতাধিক বৈদ্যুতিক খুঁটি রয়েছে। সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের কাছে একাধিকবার তাগাদা দিলেও খুঁটি সরানো হয়নি।
কুমিল্লা সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ কুমিল্লার উপবিভাগীয় প্রকৌশলী রেজা-ই রাব্বী বলেন, ২০১৭ সালের ৩ অক্টোবর কুমিল্লা নগরের টমছম ব্রিজ থেকে নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ পর্যন্ত ৫৯ কিলোমিটার সড়কে চার লেন প্রকল্প নেওয়া হয়। এর মধ্যে কুমিল্লা অংশে ৪৫ কিলোমিটার ও নোয়াখালী অংশে ১৪ কিলোমিটার। চার লেনের ওই মহাসড়ক নির্মাণে ২ হাজার ৩০ কোটি ৬৩ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। আগামী বছরের ৩০ জুন ওই প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। কুমিল্লা-নোয়াখালী চার লেন মহাসড়ক চারটি প্যাকেজে হচ্ছে। এর মধ্যে কুমিল্লা নগরের টমছম ব্রিজ থেকে লালমাই পর্যন্ত ১১ কিলোমিটার প্যাকেজ-১–এর অধীনে হচ্ছে। এই অংশের ৫ কিলোমিটারের কাজ শেষ হয়েছে। অপর অংশের কাজ চলমান। কিন্তু সড়ক সম্প্রসারণের কারণে সড়কের মধ্যে থাকা খুঁটি না সরানোর কারণে উন্নয়নকাজ ব্যাহত হচ্ছে।
লাইন ও খুঁটি সরাতে অনেক টাকা লাগবে। এ ছাড়া জমি অধিগ্রহণও বাকি আছে।মো. মোয়াজ্জেম হোসেন, প্রধান প্রকৌশলী, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড, কুমিল্লা
সরেজমিনে গত শুক্রবার দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত নগরের জাঙ্গালিয়া ও আশ্রাফপুর বাস টার্মিনাল এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সড়কের পূর্ব পাশে ৫০ টির মতো বৈদ্যুতিক খুঁটি আছে। খুঁটির চতুর্দিকে জায়গা খালি রেখে সড়ক পাকা করা হয়েছে। খুঁটির কারণে বাস টার্মিনালে বাস ঢুকতে পারছে না।
একই অবস্থা দেখা গেছে নগরের পদুয়ার বাজার, শ্রীমন্তপুর ঈদগাহ এলাকা এবং সদর দক্ষিণ উপজেলার বিজয়পুর রেলক্রসিং পার হয়ে পাকা সেতু এলাকার পশ্চিম পাশে। বৈদ্যুতিক খুঁটির কারণে সেখানে উন্নয়নকাজ ব্যাহত হতে দেখা গেছে। মাটি কাটার কারণে সেতুর পাশে যেকোনো সময় খুঁটি উপড়ে পড়ে প্রাণহানিরও আশঙ্কা রয়েছে।
সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক মো. সিপন ও বাসচালক ফজলুর রহমান বলেন, খুঁটির কারণে গাড়ি চালাতে কষ্ট হচ্ছে।
কুমিল্লা-নোয়াখালী চার লেন মহাসড়ক প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ও কুমিল্লা অঞ্চলের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. শওকত আলী বলেন, ‘সওজের পক্ষ থেকে একাধিকবার চিঠি দেওয়া হয়েছে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডকে। কিন্তু তারা খুঁটি সরাচ্ছে না। এ কারণে উন্নয়নকাজ ব্যাহত হচ্ছে।’
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড কুমিল্লার প্রধান প্রকৌশলী মো. মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, লাইন ও খুঁটি সরাতে অনেক টাকা লাগবে। এ ছাড়া তাঁদের জমি অধিগ্রহণও বাকি আছে। এ কারণেও দেরি হচ্ছে।
কুমিল্লা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২–এর মহাব্যবস্থাপক মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আমাদের যেগুলো খুঁটি ছিল, আমরা সরিয়ে দিয়েছি। এরপরও কোনো খুঁটি থাকলে সেগুলো সরিয়ে নেব।’