খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য ওয়াদুদ ভূঁইয়ার বাড়িতে হামলা এবং গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় থানায় মামলা না নেওয়ার প্রতিবাদে জেলা বিএনপির ২৪ ঘণ্টার সড়ক অবরোধ কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে চলছে। আজ মঙ্গলবার ভোর ছয়টা থেকে এ অবরোধ শুরু হয়।
অবরোধের কারণে জেলা শহরের অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা নৈশকোচগুলোকে রামগড় থেকে পুলিশ পাহারায় শহরে নিয়ে আসা হয়। এতে বিপাকে পড়েন সাজেকগামী পর্যটকেরা।
সকালে শহরের শাপলা চত্বরে কয়েকজন পর্যটকের সঙ্গে কথা হয়। তাঁরা বলেন, সাজেক যাওয়ার জন্য ৪০ জনের একটি দল এসেছে। তাঁরা বিএনপির সড়ক অবরোধের বিষয়টি জানতেন না। এমনকি সাজেকে যে হোটেলটি বুকিং করে রেখেছেন, তারাও কিছুই জানায়নি। বিষয়টি এখানে এসে জেনেছেন। আগে জানলে এমন দুর্ভোগে পড়তে হতো না তাঁদের।
শহরের চেঙ্গী সেতু, খাগড়াছড়ি গেট, কলাবাগান, ভাঙ্গাব্রিজ এলাকায় সকালে টায়ার জ্বালিয়ে পিকেটিং করতে দেখা গেছে। এ ছাড়া চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি সড়কের গুইমারা উপজেলার বাইল্ল্যাছড়ি ও পানছড়ি-খাগড়াছড়ি সড়কের পেরাছড়া এলাকায় গাছ কেটে সড়কের ওপর ফেলে রাখেন পিকেটাররা। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সড়কের ওপর থেকে গাছ সরিয়ে দেন। এ সময় অনেককে হেঁটে নিজ নিজ গন্তব্যে যেতে দেখা গেছে। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শহর এলাকায় ব্যাটারিচালিত ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ছোট ট্রাক ও মোটরসাইকেলের চলাচল বেড়েছে।
খাগড়াছড়ি সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের (শান্তি পরিবহন) সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান খোকন বলেন, সড়ক অবরোধের কারণে সমিতির গাড়ি চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। আগামীকাল বুধবার সকাল থেকে বিভিন্ন সড়কে বাসগুলো আবারও চলাচল করবে।
জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এম এন আবছার প্রথম আলোকে বলেন, আওয়ামী লীগের লোকজন বিনা উসকানিতে সাবেক সংসদ সদস্য ওয়াদুদ ভূঁইয়ার গাড়ি ও বাড়ি ভাঙচুর করেছেন। এ সময় ক্ষমতাসীন দলের কর্মীরা আশপাশের চারটি বাড়িঘর ভাঙচুর করেন ও একটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেন। পুলিশের সামনেই এমন ঘটনা ঘটেছে। অথচ মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা না নিয়ে উল্টো তাঁদের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করেছে।
এম এন আবছার আরও বলেন, ‘জনগণ আমাদের শান্তিপূর্ণ সড়ক অবরোধকে সমর্থন করছে। এতেই বোঝা যাচ্ছে, সাধারণ মানুষ আওয়ামী লীগ সরকারের ওপর বিরক্ত।’
খাগড়াছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ রশিদ বলেন, কোথাও কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলোয় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
৪ জুন আওয়ামী লীগ শহরের নারকেলবাগান এলাকা থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শহরের ভাঙ্গাব্রিজ এলাকায় পৌঁছালে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় আওয়ামী লীগের লোকজন সাবেক সংসদ ওয়াদুদ ভূঁইয়ার বাড়ি ও গাড়ি ভাঙচুর করেন। সংঘর্ষে দুই পক্ষের আটজন আহত হন।