কোমল পানীয় ভেবে কীটনাশক পানে তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রীর মৃত্যু

হাসানুর রহমান (৮)
ছবি: সংগৃহীত

ঝিনাইদহের শৈলকুপায় কোমল পানীয়র বোতলে রাখা কীটনাশক পান করে হাসানুর রহমান (৮) নামের এক শিশু মারা গেছে। গত বৃহস্পতিবার উপজেলার ব্রহ্মপুর গ্রামে নিজ বাড়িতে কীটনাশক পান করে শিশুটি। আজ সোমবার সকালে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

হাসানুর উপজেলার ব্রহ্মপুর গ্রামের নিপুল জোয়ার্দ্দারের ছেলে। নিপুল জোয়ার্দ্দার জমির আগাছা পরিষ্কারের জন্য বাজার থেকে কোমল পানীয়র বোতলে কীটনাশক এনে বাড়ির বারান্দায় রেখেছিলেন। শিশু হাসানুর ভুলে সেই কীটনাশক পান করে।

শিশুর নানা মনোয়ার উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, নিপুল জোয়ার্দ্দারের আট বিঘা চাষের জমি আছে। জমিতে তিনি বিভিন্ন ধরনের ফসলের চাষ করেন। জমির আগাছা পরিষ্কারের জন্য গত বৃহস্পতিবার দুপুরে তিনি বাজার থেকে কোমল পানীয়র বোতলে কীটনাশক কিনে আনেন। সেটা তিনি বাড়ির বারান্দায় রেখেছিলেন। ওইদিন সন্ধ্যায় হাসানুর পানীয় ভেবে তা পান করে। এরপর কিছুটা অসুস্থ হয়ে পড়লে বাড়ির অন্যদের শরীর খারাপের কথা জানায়। এ সময় বাবা নিপুল জোয়ার্দ্দার দেখতে পান, তাঁর রাখা সেই কীটনাশকের বোতলের অনেকটাই খালি। তিনি বিষয়টি বুঝতে পেরে দ্রুত তাকে শৈলকুপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে পরের দিন ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানেও কোনো উন্নতি না হওয়ায় রোববার বিকেলে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ সকাল ৯টায় সে মারা যায়।

আজ বিকেলে ওই শিশুর বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, তার বাবা নিপুল জোয়ার্দ্দার ও মা আফরোজা বেগম এখনো হাসপাতালে। বাড়িতে আত্মীয়স্বজনদের ভিড়। প্রতিবেশীরাও ওই বাড়িতে ভিড় করছেন। নিকটাত্মীয়দের দুই-একজন কান্নাকাটি করছেন। সবাই লাশের জন্য অপেক্ষা করছে। লাশ নিয়ে রাজশাহী থেকে বাড়ির পথে রওনা দিয়েছে বলে পরিবার সূত্রে জানা গেছে।

প্রতিবেশী এরশাদ আলী প্রথম আলোকে জানান, হাসানুররা তিন ভাই–বোন। মুসলিমা নামে তার একটি যমজ বোন আছে। এ ছাড়া সাহাবুদ্দিন নামে আরেক বড় ভাই আছে। তিনি বলেন, ফুটফুটে চেহারার শিশুটি খুব ভালো ছিল। তা ছাড়া যমজ ভাই–বোন সব সময় একসঙ্গে চলাফেরা করত। একই সঙ্গে ব্রহ্মপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ত। ব্রহ্মপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাসানুল কবির বলে, সে পড়ালেখায় খুবই ভালো ছিল।

শৈলকুপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমিরুল ইসলাম বলেন, তিনি খবর পেয়েছেন। রাজশাহীতে মারা যাওয়ায় সেখানে লাশের ময়নাতদন্ত হবে। পরিবারের লোকজনকে থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়েরের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।