ভারী বৃষ্টি ও উজানে ঢলের কারণে কুড়িগ্রামে ধরলা, তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র, দুধকুমার, গঙ্গাধর নদ–নদীর অববাহিকায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। ধরলা নদী ও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি ক্রমাগত বাড়ছে। আজ শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে ধরলা নদীর সেতু পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এদিকে ব্রহ্মপুত্রের চিলমারী পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার ওপরে ছিল।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল্লাহ আল মামুন প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে আজ সকাল ছয়টায় ধরলা নদীর একই পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৩ সেন্টিমিটার ওপরে ছিল এবং ব্রহ্মপুত্রের চিলমারী পয়েন্টে পানি বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই অবস্থায় ছিল।
জেলা প্রশাসন ও পাউবো সূত্রে জানা গেছে, জেলার প্রধান নদীগুলোতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় চরাঞ্চলের ঘরবাড়িতে পানি উঠেছে। এতে অন্তত ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। চরের প্রধান সড়ক থেকে শুরু করে আমনের বীজতলা, পাট, সবজি, ভুট্টাসহ বিভিন্ন ফসলের খেত পানিতে তলিয়ে গেছে। পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে একাধিক উপজেলায় নদীভাঙন দেখা দিয়েছে। রাজারহাট উপজেলার জয়কুমর, গতিয়াশাম, সদর উপজেলার সারডোর, প্রথম আলো চর, উলিপুরের অর্জুন, থেতরাই, নাগেশ্বরীর রায়গঞ্জসহ অন্তত ৩০টি স্পটে নদীরভাঙন তীব্র রূপ নিয়েছে।
এদিকে পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট কুড়িগ্রামের রৌমারী ও রাজীবপুর উপজেলার বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। দুই উপজেলার বন্যাকবলিত এলাকাগুলোর কাঁচা-পাকা সড়ক পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে।
কুড়িগ্রাম পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, বন্যার পানি ক্রমাগত বাড়ছে। নদ–নদীর অববাহিকায় থাকা চরগুলোতে পানি উঠেছে। তবে বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
জেলা প্রশাসক রেজাউল করিম বলেন, ‘আমাদের কাছে পর্যাপ্ত ত্রাণ আছে। প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই বন্যাকবলিত ৮০০ মানুষকে ত্রাণ দেওয়া হয়েছে।’