কুষ্টিয়া সদর উপজেলায় শেখ রাসেল কুষ্টিয়া-হরিপুর সংযোগ সেতুর রক্ষা বাঁধের কিছু অংশ আজ শনিবার ধসে পড়েছে। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে হরিপুর এলাকায় বাঁধের প্রায় ৩০ মিটার ব্লক গড়াই নদে বিলীন হয়।
ধসে পড়া অংশের পাশেই একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এখান থেকে এক শ মিটার দূরে সেতুর অবস্থান।
জানতে চাইলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী পীযূষ কৃষ্ণ কুণ্ডু বলেন, কয়েক দিন ধরে গড়াই নদে বন্যার পানি প্রতিদিন ৬ থেকে ৭ সেন্টিমিটার কমছে। নদে স্রোতও আছে। ধারণা করা হচ্ছে, পানি কমার কারণে বাঁধে ধস নামতে পারে। পানি কমলে আরও ধস নামতে পারে। এখনই বালুবোঝাই জিও বস্তা ফেলা হচ্ছে, ধস ঠেকানো সম্ভব হতে পারে। বাঁধটি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের (এলজিইডি) তত্ত্বাবধানে। তারাই এটি দেখাশোনা করবে।
এ ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে এলজিইডির কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।জুবায়ের হোসেন চৌধুরী, ইউএনও
এলজিইডির সদর উপজেলা কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, কুষ্টিয়া শহরের পাশেই হরিপুর ইউনিয়ন। এ ইউনিয়নকে শহরের সঙ্গে সংযুক্ত করতে গড়াই নদের ওপর ২০১৭ সালে শেখ রাসেল কুষ্টিয়া-হরিপুর সংযোগ সেতু নির্মাণ করা হয়। সেতুটি ওই বছরের ২৪ মার্চ উদ্বোধন করা হয়। সেতুটি রক্ষার জন্য উভয় পাশে ব্লক বাঁধও তৈরি করা হয়। সেতুটি নির্মাণে প্রায় ৭৮ কোটি টাকা ব্যয় হয়। আর সেতুর উভয় পাশের ৪১০ মিটার ব্লক বাঁধ নির্মাণে ব্যয় হয় প্রায় ১০ কোটি টাকা।
এর মধ্যে হরিপুর অংশে সেতুর পশ্চিম ও পূর্ব পাশে অন্তত ৩০০ মিটার বাঁধ নির্মাণ করা হয়। এলজিইডির তত্ত্বাবধানে ২০১৩ সালের ২২ ডিসেম্বর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মীর আকতার লিমিটেড ওই সেতু ও ব্লক বাঁধ নির্মাণের কার্যাদেশ পায় নির্মাণের প্রায় সাড়ে তিন বছর পর আজ বেলা সাড়ে ১১টায় সেতুর পূর্ব পাশের কিছু অংশের ব্লক পানিতে ধসে পড়ে। সেতু থেকে অন্তত ১০০ মিটার দূরে এ ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। ধসে যাওয়া অংশের পরিমাণ প্রায় ৩০ মিটার।
সরেজমিনে দেখা যায়, ব্লক ধসে পানিতে তলিয়ে গেছে। পানিতে বুদ্বুদ সৃষ্টি হয়েছে। সেখানে আরও কিছু অংশ ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে।
বাঁধের পাশের দোকানি মনু মণ্ডল বলেন, বাঁধের কাছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নদ খননযন্ত্র ছিল। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে হঠাৎ বাঁধের পানিতে বুদ্বুদ উঠতে শুরু করে। এ সময় সেখানে থাকা মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। দ্রুত খননযন্ত্রটি সরিয়ে নেওয়া হয়। এর কয়েক মিনিট পর ব্লক বাঁধ ভেঙে পানিতে তলিয়ে যায়। একপর্যায়ে ব্লকের কয়েকটি সারি একযোগে ভেঙে পড়ে।
জানতে চাইলে সদর উপজেলা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী জহুরুল ইসলাম বলেন, ছুটির দিন হওয়ায় তিনি বাইরে আছেন। তবে বাঁধে ধসের খবর পেয়েছেন। ভাঙন দেখতে সেখানে একজন কর্মকর্তা পাঠানো হচ্ছে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জুবায়ের হোসেন চৌধুরী বলেন, এ ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে এলজিইডির কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।