কুষ্টিয়ায় হিরণ ‘হত্যা’য় জড়িতদের বিচার দাবি

কুষ্টিয়ার খোকসায় কলেজশিক্ষার্থী হিরণ হত্যায় জড়িতদের বিচারের দাবিতে এলাকাবাসী ও আত্মীয় স্বজনদের মানববন্ধন। খোকসা বাসস্ট্যান্ড এলাকায়
ছবি: প্রথম আলো

কুষ্টিয়ার খোকসায় একটি প্রাইভেট হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে হিরণ নামের এক কলেজশিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনাকে হত্যা বলে অভিযোগ করেছেন পরিবার ও এলাকাবাসী। এর পেছনে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছেন তাঁরা।

আজ রোববার বেলা ১১টায় খোকসা কলেজ ক্যাম্পাস থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি বের হয়ে খোকসা বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে শেষ হয়। এ সময় কুষ্টিয়া-রাজবাড়ী আঞ্চলিক মহাসড়ক অবরোধ করে স্লোগান দিতে থাকেন বিক্ষোভকারীরা।

গত বুধবার দিবাগত রাতে খোকসা শহরের নিউ খোকসা হেলথকেয়ার প্রাইভেট হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ভেতর হিরণ অচেতন অবস্থায় পড়ে ছিলেন। পরে তাঁকে উদ্ধার করে খোকসা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন। হিরণ উপজেলার শিমুলিয়ার সিংহরিয়া গ্রামের আকমল শেখের ছেলে। তিনি রাজবাড়ী সরকারি কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। পড়াশোনার পাশাপাশি তিনি নিউ খোকসা হেলথকেয়ার প্রাইভেট হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ল্যাব অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

আজ বেলা ১১টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত কুষ্টিয়া-রাজবাড়ী আঞ্চলিক মহাসড়কটি অবরোধ করে কর্মসূচি পালন করার সময় সড়কের উভয় পাশে প্রায় দুই কিলোমিটার যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে সাধারণ যাত্রীরা ভোগান্তিতে পড়েন। পরে খোকসা থানা–পুলিশের একটি দল গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। হত্যার অভিযোগের বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে বিক্ষোভকারীরা অবরোধ তুলে নেন।

মানববন্ধনে অংশ নিয়ে নিহত কলেজছাত্র হিরণের বাবা আকমল হোসেন বলেন, ‘আমার ছেলে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ত। ক্লিনিকের নানা অসামাজিক কাজের কারণে সে কয়েক দফায় চাকরি ছাড়ার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু সবকিছু ফাঁসের ভয়ে মালিক সেলিম হোসেন তাকে ছাড়েনি। ক্লিনিকের মালিক সেলিম হোসেন ও বাড়ির মালিক আবদুর ছাত্তারের ছেলে হাবিব পরিকল্পিতভাবে হিরণকে হত্যা করেছে।’ মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন নিহত হিরণের মামা নিজাম উদ্দিন, গ্রামবাসী মতিয়ার রহমান, কলেজছাত্র সেলিম রেজা, বাঁধন, সুজন প্রমুখ।

বিক্ষোভ সমাবেশে আনা অভিযোগ সঠিক নয় বলে দাবি করেছেন নিউ খোকসা হেলথকেয়ার প্রাইভেট হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক সেলিম হোসেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। বিকেলে পুলিশ এসে ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ রাখার অনুরোধ করে, সেটা করেছি। এ ছাড়া ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে যদি কোনো মারধরের বিষয় আসে, তবে সেটার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে যেন ব্যবস্থা নেওয়া হয়। বিক্ষোভ সমাবেশে যে অভিযোগ আনা হয়েছে, সেটা সঠিক নয়।’

খোকসা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সৈয়দ আশিকুর রহমান চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, হিরণের মৃত্যুর পর থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।