কুষ্টিয়ায় মানুষকে ঘরে রাখতে তৎপর প্রশাসন, ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু ৩

কুষ্টিয়া জেলাজুড়ে কঠোর লকডাউন চলছে। দৌলতপুরের ইউএনও শারমিন আকতার মাঠে তৎপর।
ছবি: প্রথম আলো

কুষ্টিয়া জেলায় করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে সাত দিনের লকডাউন চলছে। রোববার দিনগত রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে জেলাজুড়ে লকডাউন শুরু হয়। সাধারণ মানুষকে ঘরে রাখতে আজ সোমবার ভোর থেকেই মাঠে তৎপর আছেন জেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।

এদিকে গতকাল রোববার সকাল ৮টা থেকে আজ সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় করোনায় তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে করোনা শনাক্ত হয়েছে ৮৩ জনের। সংক্রমণের হার স্থিতিশীল থাকলেও গত তিন দিনের তুলনায় মৃত্যুর হার কমেছে। তবে হাসপাতালে করোনা রোগী ভর্তির সংখ্যা বাড়ছে। সোমবার দুপুর পর্যন্ত হাসপাতালে ১৩২ জন করোনা রোগী চিকিৎসাধীন ছিলেন। যেখানে শয্যাসংখ্যা ১০০টি।

২৫০ শয্যাবিশিষ্ট কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) তাপস কুমার সরকার বলেন, গত তিন দিনে এই হাসপাতালে গড়ে সাত থেকে আটজনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। সেখানে সর্বশেষ গত ২৪ ঘণ্টায় তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। তবে করোনায় আক্রান্ত রোগীর ভর্তির সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে যাওয়ায় চাপ সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

রোগীদের চাপ সামাল দিতে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালকে করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতাল হিসেবে ঘোষণার প্রক্রিয়া প্রায় শেষের দিকে। হাসপাতালে ২৪ ঘণ্টা জরুরি সেবা বাদে অন্যান্য বহির্বিভাগ সেবা সীমিত করা হচ্ছে।

করোনা সংক্রমণের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় সাত দিনের কঠোর লকডাউন বাস্তবায়নে কাজ করছেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা-কর্মচারীরা। আজ সকাল থেকেই পুলিশ সুপার খাইরুল আলম তাঁর সহকর্মীদের নিয়ে মাঠে ছুটে বেড়াচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘জনগণের সাময়িক অসুবিধা হলেও কিছু করার নেই। জীবন বাঁচাতে একটু কঠোর হতে হচ্ছে।’

পুলিশের পাশাপাশি জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও মাঠে সরব। কুমারখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাজীবুল ইসলাম খান বলেন, হাটবাজারে টহল দেওয়া হচ্ছে। মানুষ সচেতন হলে করোনা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।

জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম বলেন, ছয়জন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, এসিল্যান্ডসহ জেলা প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেটদের সমন্বয়ে গঠিত একাধিক টিম মাঠেই আছে। মানুষের কল্যাণের জন্য যা যা প্রয়োজন সবই করা হচ্ছে।

জেলা সিভিল সার্জন এইচ এম আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, কঠোর লকডাউন সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করা গেলে করোনার ঊর্ধ্বমুখী নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। গ্রামগুলোতেও নজর দিতে হবে।

কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনের সাংসদ ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, আগে জীবন, তারপর জীবিকা। কুষ্টিয়ার পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাচ্ছে। তাই সব সময় খোঁজ রাখা হচ্ছে। যেকোনো উপায়ে জেলায় করোনা নিয়ন্ত্রণে আনা হবে।