জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলার কুশলনগর গ্রামে দশানী নদীর ভাঙনে বিলীন হচ্ছে ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি। গত শনিবার সকালে তোলা ছবি।
জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলার কুশলনগর গ্রামে দশানী নদীর ভাঙনে বিলীন হচ্ছে ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি। গত শনিবার সকালে তোলা ছবি।

কুশলনগর গ্রাম বিলীনের আশঙ্কা

দশানী নদীর ভাঙনে জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলার কুশলনগর গ্রামের প্রায় এক কিলোমিটার বিলীন হয়ে গেছে। সাত বছর ধরে ভাঙন চলছে। ভাঙনে ফসলি জমি, ফলের বাগান, রাস্তা ও শতাধিক বসতভিটাও নদীতে চলে গেছে। নদীভাঙনের কারণে হুমকিতে রয়েছে শতাধিক বসতভিটা। নদীভাঙন ঠেকাতে দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে পুরো কুশলনগর গ্রাম নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করছে এলাকাবাসী।

এ বিষয়ে পাউবো জামালপুর কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবু সাঈদ বলেন, কুশলনগর গ্রাম পরিদর্শন করে ভাঙন ঠেকাতে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, বকশীগঞ্জের নিলাক্ষিয়া ইউনিয়নে কুশলনগর গ্রাম। বৃষ্টির কারণে নদীতে পানি বেড়ে যাওয়ায় কয়েক সপ্তাহ ধরে ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। স্থানীয় লোকজন বলেন, ভাঙনরোধে সরকার এখনো কোনো উদ্যোগ নেয়নি। এ পরিস্থিতিতে ওই গ্রামের লোকজনই ১০–১৫টি স্থানে বাঁশের বেড়া দিয়ে মাটি ফেলে ভাঙনরোধের চেষ্টা করছেন।

কুশলনগর গ্রামের কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, গ্রামের পশ্চিম পাশ দিয়ে দশানী নদী চলে গেছে। চলতি বর্ষা মৌসুমে নদের পানি বেড়ে যাওয়ায় প্রবল স্রোত বইছে। প্রায় এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ভাঙন চলছে। ফসলি জমির মাটি ভেঙে নদীতে আছড়ে পড়ছে। ভাঙনে বিভিন্ন স্থানে ফলের বাগান ও গাছপালা ভেঙে পড়ছে। এখন পর্যন্ত গ্রামের চার ভাগের এক ভাগ এলাকা বিলীন হয়ে গেছে। অনেকেই বসতঘর সরিয়ে নিচ্ছেন। গত কয়েক দিনে ১০টি বসতভিটা বিলীন হয়ে গেছে। কয়েক সপ্তাহের মধ্যে গ্রামের অর্ধশত ঘরবাড়ি নদীতে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

গত কয়েক দিনে কুশলনগর গ্রামের নূর ইসলাম, সুজা মিয়া, জহুরুল হক, জয়নাল আবেদিন, আমতাজ আলী, নাজিম উদ্দিনসহ ১০ জনের বসতভিটা নদীগর্ভে চলে গেছে। নাজিম উদ্দিন বলেন, শুকনা মৌসুমে ভাঙন তুলনামূলক কম থাকে। বর্ষা শুরুর সঙ্গে সঙ্গে ভাঙন শুরু হয়। কয়েক বছরে এ গ্রামের ফসলি জমি, রাস্তাঘাট, ফলের বাগান ও বহু ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। কিন্তু ভাঙনরোধে সরকারিভাবে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। এবার বর্ষার শুরু থেকে অনেকের সঙ্গে তাঁর ঘরবাড়ি বিলীন হয়েছে।

এ বিষয়ে নিলাক্ষিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম বলেন, প্রতিবছর বর্ষায় এ গ্রামে নদীর ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করে। কিন্তু ভাঙনরোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।