কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র মো. সোহেলের হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে আজ বৃহস্পতিবার মানববন্ধন করেছেন মেয়র ও কাউন্সিলররা। বেলা ১১টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত টানা আধা ঘণ্টা কুমিল্লা প্রেসক্লাবের সামনে ওই মানববন্ধন হয়। কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে ওই মানববন্ধন হয়। মানববন্ধনে জনপ্রতিনিধিদের নিরাপত্তা দাবি করা হয়।
আয়োজকেরা জানিয়েছেন, বেলা ১১টার আগেই নগরের ২৬টি ওয়ার্ড থেকে সাধারণ কাউন্সিলর ও ৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড থেকে নারী কাউন্সিলররা ব্যানার নিয়ে কুমিল্লা প্রেসক্লাবের সামনে জড়ো হন। এরপর কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের ব্যানারে মেয়র মো. মনিরুল হক সাক্কু ব্যানার নিয়ে আসেন। আয়োজনে নগর ভবনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা উপস্থিত হন। কুমিল্লা সার্কিট হাউস মোড় থেকে গণপূর্ত ভবন পর্যন্ত দীর্ঘ মানববন্ধনে শত শত মানুষ উপস্থিত হন।
মানববন্ধনে মেয়র মো. মনিরুল হক সাক্কু বলেন, ‘ঘটনার তিন দিন পেরিয়ে গেছে। এখন পর্যন্ত হত্যা মামলার প্রধান আসামিসহ অন্য আসামিরা গ্রেপ্তার হননি। আমরা সব আসামির গ্রেপ্তার দাবি করছি। একই সঙ্গে জনপ্রতিনিধিদের নিরাপত্তা দাবি করছি। প্রকাশ্য দিবালোকে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ঢুকে একজন জনপ্রিয় কাউন্সিলরকে হত্যা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছি না।’
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের টানা ছয়বারের কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র জমির উদ্দিন খান, প্যানেল মেয়র নুরজাহান আলম পুতুল।
মানববন্ধনে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আলমগীর হোসেন, ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. আবদুস সত্তার ও ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আবুল হাসান উপস্থিত ছিলেন। এই তিন কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে দুজন কাউন্সিলর প্রার্থী ও একজন ব্যবসায়ীকে হত্যার ঘটনায় মামলা আছে। তাঁরা বর্তমানে জামিনে আছেন।
কাউন্সিলর মো. সোহেলের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বাবুল বলেন, ‘সোহেলের সঙ্গে আমার বন্ধুত্ব ১৯৮৮ সাল থেকে। পাশাপাশি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আমরা। ওর ওয়ার্ডে আমার একটি বাড়িও আছে। সোহেল সাহসী ছিলেন। ও টেরই পায়নি ওরে কেউ গুলি করে মারবে। হত্যা মামলার আসামিরা দুর্ধর্ষ প্রকৃতির লোক। এদের গ্রেপ্তার করা হোক।’
পরে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. মনিরুল হক সাক্কু মৌন মিছিল নিয়ে কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান ও জেলা পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদের কাছে স্মারকলিপি দেন। স্মারকলিপিতে অবিলম্বে হত্যা মামলার আসামিদের গ্রেপ্তার করে বিচার দাবি করা হয়।
২২ নভেম্বর বিকেল সাড়ে চারটার দিকে কুমিল্লা নগরের পাথুরিয়াপাড়া থ্রিস্টার এন্টারপ্রাইজ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. সোহেল ও তাঁর সহযোগী হরিপদ সাহাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ সময় আরও কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হন। এই ঘটনায় নিহত কাউন্সিলরের ছোট ভাই সৈয়দ মো. রুমন বাদী হয়ে ১১ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও ১০ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। র্যাব এই মামলার ৪ নম্বর আসামি সুজানগর বউবাজার এলাকার বাসিন্দা মো. সুমনকে (৩২) গ্রেপ্তার করেছে।