রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলায় এক স্কুলশিক্ষককে হাতুড়িপেটা ও কুপিয়ে জখম করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার সোনাপুর মোড়ে এ ঘটনা ঘটেছে। গত ইউপি নির্বাচনের জেরে এই হামলা চালানো হয়েছে বলে ওই স্কুলশিক্ষক অভিযোগ করেছেন।
ওই শিক্ষকের নাম মো. আক্তারুজ্জামান (৫৭)। তিনি কালুখালী উপজেলার মাঝবাড়ী ইউনিয়নে মাঝবাড়ী হুরুন্নেছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সভাপতি। তাঁর বাড়ি একই ইউনিয়নের কোমড়পুর গ্রামে। আক্তারুজ্জামান বর্তমানে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
আক্তারুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার পরিবার আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। আমি ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সভাপতি ছিলাম। তবে সরকারি বিদ্যালয়ে চাকরি হওয়ার পর থেকে সক্রিয়ভাবে রাজনীতি করি না। তবে নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের ভোট দিই। বিগত উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনেও আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীকে ভোট দিয়েছি। তাঁর পক্ষে এলাকায় কাজ করেছি। এ ঘটনায় বিদ্রোহী প্রার্থী ইউসুফ হোসেনের ছেলে সোহেল এবং জিল্লু আমাকে আগে একাধিকবার হুমকি দিয়েছিল। কিন্তু নির্বাচন অনেক দিন হয়ে যাওয়ায় এসব ভুলে গিয়েছিলাম।’
হামলার বর্ণনা দিয়ে আক্তারুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, আজ সকালে তিনি মোটরসাইকেল চালিয়ে বিদ্যালয়ে যাচ্ছিলেন। পথে সোনাপুর মোড়ে থেমে একজনকে টাকা দেওয়ার জন্য অপেক্ষা করছিলেন। এ সময় জিল্লু হোসেন ও মো. কামরুল নামের দুই ব্যক্তি এসে তাঁকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন। এ সময় তাঁরা হাতুড়ি দিয়ে পেটাতে থাকেন। একপর্যায়ে হামলাকারীরা তাঁর পায়ে চায়নিজ কুড়াল দিয়ে আঘাত করেন। পরে তাঁর চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যান। হামলাকারীরা তাঁর কাছে থাকা ১৫ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়েছেন বলে তিনি দাবি করেন।
অভিযুক্ত জিল্লু হোসেন ও মো. কামরুল দুজনই উপজেলার মোহনপুর গ্রামের বাসিন্দা। তাঁরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক ইউসুফ হোসেনের ঘনিষ্ঠজন বলে দাবি ভুক্তভোগীর। ইউসুফ হোসেন গত বছরের ২৮ নভেম্বর মাঝবাড়ী ইউপি নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে অংশ নিয়ে পরাজিত হয়েছিলেন।
ওই ইউপিতে জয়ী নৌকার প্রার্থী কাজী শরীফুল ইসলাম বলেন, আক্তারুজ্জামান এলাকায় সজ্জন ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত। তিনি আওয়ামী পরিবারের সদস্য। নৌকা প্রতীকের নির্বাচন করায় তাঁর ওপর হামলা করা হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।
তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করে ইউসুফ হোসেন বলেন, ‘নির্বাচন কয়েক মাস আগেই শেষ হয়ে গেছে। আমিও আওয়ামী লীগ করি। সবার সঙ্গেই আমার সম্পর্ক থাকে। তবে আমি হামলার কোনো নির্দেশ দিইনি। হামলাস্থলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখলেই সব জানা যাবে।’
কালুখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হাসান বলেন, মৌখিকভাবে বিষয়টি জানার পর ঘটনাস্থলে পুলিশ কর্মকর্তা পাঠানো হয়েছে। তবে এ ঘটনায় এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি।