সড়কে কালভার্ট নির্মাণে নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহার করা হচ্ছিল। এতে এলাকার লোকজনের সন্দেহ হয়। তাঁরা বিষয়টি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের জানান। পরে জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের নিয়োজিত লোকদের কাজ বন্ধ রাখতে বলেন। এরপর কাজটি বাস্তবায়নের দায়িত্বে থাকা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের লোকজন নিম্নমানের উপকরণ সরিয়ে নতুন করে ঢালাইকাজ করার জন্য ঠিকাদারকে নির্দেশ দেন। বৃহস্পতিবার মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার জুড়ী-লাঠিটিলা সড়কের নয়াবাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর (সওজ) ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, জুড়ী উপজেলার বিভিন্ন সড়কে আটটি বক্স কালভার্ট নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে সওজ। প্রায় সাত কোটি টাকা বাজেটের এসব কাজ পান ঠিকাদার সৈয়দ রেজাউর রহমান। তিনি মৌলভীবাজার জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে নয়াবাজার এলাকায় কালভার্টে ঢালাইকাজ শুরু হয়। এলাকাবাসী দেখেন সেখানে পুরোনো ইটের খোয়া ব্যবহার ও নিম্নমানের কাজ করা হচ্ছে। এতে তাঁদের সন্দেহ হয়। এ বিষয়ে ঠিকাদারের নিয়োজিত শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে তাঁরা কোনো সদুত্তর পাননি।
খবর পেয়ে দুপুরের দিকে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ মোঈদ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আল ইমরান রুহুল ইসলাম ও স্থানীয় পূর্ব জুড়ী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সালেহ উদ্দিন সেখানে যান। বিকেলের দিকে সওজ অধিদপ্তরের মৌলভীবাজার কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী জিয়া উদ্দিনসহ কয়েকজন কর্মকর্তা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
জুড়ীতে দায়িত্বে থাকা সওজ অধিদপ্তরের উপসহকারী প্রকৌশলী সুভাষ পুরকায়স্থ বলেন, সকালে গিয়ে খোয়া দেখে তা ঢালাইকাজে ব্যবহার না করতে নিষেধ করে এসেছেন।
ইউএনও আল ইমরান রুহুল ইসলাম মুঠোফোনে বলেন, ঢালাইকাজে পাথরের বদলে খোয়া ব্যবহার হচ্ছিল। এ ছাড়া খোয়াগুলো ছিল খুবই নিম্নমানের। পরিত্যক্ত ইট ভেঙে এসব খোয়া তৈরি করা হয়। এ অবস্থায় কাজ বন্ধ রাখতে বলেন। বিষয়টি তৎক্ষণাৎ সওজ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের জানান। তাঁরা এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন। এলাকাবাসীর সচেতনতার কারণে নিম্নমানের কাজটি ঠেকানো সম্ভব হয়েছে।
কার্যাদেশে ঢালাইকাজে পাথর ব্যবহারের কথা উল্লেখ আছে বলে জানান সওজ অধিদপ্তরের মৌলভীবাজার কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী জিয়া উদ্দিন। তিনি বলেন, খোয়া দিয়ে যেটুকু ঢালাই হয়েছে, তা সরিয়ে ফেলতে ঠিকাদারকে বলা হয়েছে। খোয়া আর ব্যবহার করা হবে না। পাথর দিয়ে ঢালাই করা হবে।
ঠিকাদার সৈয়দ রেজাউর রহমান বলেন, কাজটি তদারকির দায়িত্বে থাকা এক ব্যক্তির ভুলে এ রকম ঘটনা ঘটে গেছে। তিনি বিষয়টি জানার পর পাথর দিয়ে নতুন করে ঢালাই দিতে বলেছেন।